
বগুড়া সংবাদ : জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অবস্থা বিবেচনায় দেশে একটি নির্বাচিত সরকার দ্রুত আনা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। বৃহস্পতিবার বিকেলে বগুড়ায় সাংগঠনিক সফরে এসে স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের ব্রিফ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঠেকাতে যাইয়েন না। জনগণের রায়কে পিছাতে চাইয়েন না। তাতে ষড়যন্ত্র কিন্তু বাড়বে। আমরা দেখেছি এখনও কিন্তু সীমান্তের ওপারে বসে আছে পরাজিত ফ্যাসিবাদ। সে এখনও নিজেকে নির্বাচিত সরকারের প্রধান মনে করে। কিভাবে মনে করে? কোন সাহসে সেটা বলে? এই কারণেই বলি সেই সাহসের বাঁধ ভেঙ্গে দিতে হলেই অতিদ্রুত একটি নির্বাচিত সরকার দরকার।’ ব্রিফ শেষে তিনি রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পর্যালোচনা সভায় অংশ নেন।সাংগঠনিক পর্যালোচনার সভা আয়োজনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে গিয়ে আব্দুস সালাম বলেন, ৫ আগস্টের আগে আমরা প্রকাশ্যে কোন সম্মেলন করতে পারিনি। আমাদের নেতা-কর্মীরা বাড়ি-ঘরে থাকতে পারেন নি। এখন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সারাদেশে সংগঠনকে আরও মজবুত এবং শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। দেশের সকল জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়নকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলার সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, রাজনৈতিক দল একটা-দুইটা হয়েছে। আরও অনেক করতে পারেন। বিএনপির পক্ষ থেকে তাতে কোন আপত্তি নেই। আজকের অনেক রাজনৈতিক দল বা অনেক নেতৃত্ব যারা বলেন যে, ‘নির্বাচন হলেই মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়ে দিবে- এই একই কারণেই কিন্তু শেখ হাসিনা ভয় পাইতেন। নির্বাচন হলেই বিএনপি ও তারেক রহমান ক্ষমতায় আসবেন। ওই ভয়েই শেখ হাসিনা নির্বাচন দেয়নি এখনও অনেকে নির্বাচন পেছানোর জন্য পায়তারা করে। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে সেটি গণতান্ত্রিক থাকে না।’আব্দুস সালাম বলেন, যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তার মধ্য দিয়েই ফ্যাসিবাদকেই আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার কোন ষড়যন্ত্র কি’না আমরা সেটা জানি না। শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও সে নির্বাচন দেয়নি। এখনও অনেকে ভয় পাচ্ছেন যে নির্বাচন যদি দেওয়া হয় তাহলে আবার বিএনপি ক্ষমতায় চলে আসবে। সেই কারণে নির্বাচন পেছাতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণ কাকে নির্বাচিত করবে সেটি জনগণের ব্যাপার। তাই আগের ফ্যাসিবাদের মত জনগণের ওপর কোন কিছু চাপিয়ে দিতে চায় তাহলে সেটি গণতন্ত্রের ভাষা না।বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য বিএনপির জন্ম হয়েছিল উল্লেখ করে আব্দুস সালাম বলেন, যেখানে আ’লীগ ব্যর্থ হয়েছে সেখানেই বিএনপি স্বার্থক হয়েছে। যেখানে শেখ মুজিব ব্যর্থ হয়েছে সেখানেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বার্থক হয়েছেন। যেখানে শেখ হাসিনা ব্যর্থ হয়েছে সেখানে বেগম খালেদা জিয়া স্বার্থক হয়েছেন।সাংগঠনিক পর্যালোচনা সভায় অংশ নেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিম, জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাহির রায়হান আহমেদ, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন। পর্যালোচনা সভাটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম এবং অপর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন।