বগুড়া সংবাদ : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার অন্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মানাধীন ভবনে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা। স্কুল পরিচালনা কমিটির অভিযোগ, নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের ইট, বালু ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ নভেম্বর উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির অন্তাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবন নির্মানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বাস্তবায়নে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৯৯ টাকা ব্যায়ে মো: সোহেল নামের এক ঠিকাদার কাজটি শুরু করেন। ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে নিম্ন মানের ইট, বালু ও পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে নির্মানাধীন ভবনে প্লাস্টারের আগেই শ্যাঁওলা ধরে দেওয়াল নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে এ সব বিষয় নিয়ে এলজিইডি প্রকৌশল বিভাগে অভিযোগ করা হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় নিন্মমান সামগ্রী দিয়েই কাজ পরিচালনা করছেন ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তফা হোসেন জানান, ঢালাইয়ে অতিরিক্ত বালু, মরা ও ময়লা যুক্ত পাথর, নিন্মমানের কাঁদাযুক্ত বালু ব্যবহার এবং দুই ও তিন নম্বর ইট দিয়ে বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, কাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নির্মান সামগ্রীর নমুনা সংরক্ষনের নিয়ম থাকলেও তারা তা করেন নি। কাজের মান নিয়ে অভিযোগ তোলার পর মনগড়া ভাবে কয়েকটি নমুনা (সিলিন্ডার) তৈরি করেছেন। প্রকৌশল অফিস থেকে যিনি দেখভালের জন্য আসেন তাঁকে অনিয়মের বিষয়গুলো বললে কর্ণপাত করেন না।
একই রকম অভিযোগ করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদা পারভীন বলেন, তারা ঢালাইয়ের কাজ রাতের আধাঁরে করে থাকেন। এতেই বোঝা যায় তাদের উদ্দেশ্য সৎ নয়।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ঠিকাদার মো: সোহেলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
উপজেলা প্রকৌশলী রিপন কুমার সাহা বলেন, খারাপ ইট ব্যবহার করার বিষয়ে স্কুল কমিটির অভিযোগ পেয়ে ওই সব ইট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও যদি ব্যবহার করে থাকে তাহলে ওই সব ইট ভেঙে ফেলা হবে। ঢালাইয়ের সময় আমরা ভালো পাথর দেখে এসেছিলাম পরবর্তীতে যদি খারাপ পাথর নিয়ে আসে তাহলে সেগুলো দেখে পরিবর্তন করতে বলা হবে। তাছাড়া নির্মাণ কাজ দেখভালের জন্য সেখানে আমাদের লোকজন রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) রুমানা আফরোজ বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। সরেজমিনে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।