

সোনাতলায় এবার মরিচ চাষীদের মাথায় হাত
বগুড়া সংবাদ :সোনাতলায় মরিচের আবাদের জন্য খ্যাত। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার মরিচের ফলন হয়েছে ভালো। কিন্তু ভালো হলে কি হবে ? মৌসুমের প্রথম দিকে বাজার দাম একটু ভালো হলেও কিছুদিন পর থেকে বর্তমানে বাজার দাম অনেক কম। এ কারণে কৃষকদের এবার মন খারাপ। তারা মাথায় হাত দিয়ে বসেছে। প্রতিমণ মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা। এতে কৃষকদের মাথায় হাত পড়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ সোহরাব হোসেন জানান সোনাতলা পৌরসভা ও ৭ ইউনিয়নে এবার ৬ হাজার ৩৯০ জন কৃষক হাইব্রিড ও দেশীয় জাতের মোট ৯১০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ করেছেন। সব জাতের মরিচের ফলন এবার ভালো। হাইব্রিড জাতের মরিচ প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ৭৩ থেকে ৭৫ মণ। দেশী জাতের মরিচ ফলন হয়েছে ৪১ থেকে ৪৩ মণ। বর্তমান বাজারে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এতে কৃষকরা লোকসানের সন্মুখীন হয়েছেন। পূর্ব তেকানী গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম এবার তিন বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড়লাখ টাকা। মুন্ডমালা গ্রামের আবুল হোসেন মরিচের আবাদ করেছেন ১০ কাঠা জমিতে। চর মধুপুর গ্রামের কৃষক ইব্রাহীম হোসেন দুই বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ করে তার ব্যয় হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এসব কৃষক জানান এবার মরিচের ফলন হয়েছে ভালো বটে। কিন্তু বাজার দর পতন বা দাম কম হওয়ায় লাভবান না হয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে। এতে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। সব এলাকায় মরিচের ফলন ভালো হলেও তবে সবচেয়ে ভালো ফলন হয় তেকানী চুকাই নগর ও পাকুল্লা ইউনিয়নের যমুনার চরাঞ্চলে। সোনাতলার পাকুল্লা,তেকানী চুকাই নগরের কাচারী,বালিয়াডাঙ্গা,উত্তর কালাইহাটা ও চরপাড়াসহ অন্যান্য পয়েন্ট থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ মরিচ গাইবান্ধা ও জয়পুরহাটসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক,ভটভটি ও ট্রেনযোগে পাইকারী বিক্রির জন্য নিয়ে যায় ব্যবসায়ীরা। তারা বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। কিন্তু কৃষকরা হয়েছেন লোকসানের শিকার। একদিকে শ্রমিক দিয়ে টাকার বিনিময়ে জমি থেকে মরিচ তুলে নিতে হচ্ছে,অন্যদিকে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবার লোকসানের কারণে হয়তো আগামী মৌসুমে মরিচের আবাদ করতে কৃষকদের আগ্রহ কমতে পারে বলে জানান কৃষকরা। তারা মনে করেন যদি এখনো মরিচের দাম বাড়ে,সেক্ষেত্রে আগামীতে মরিচ চাষে আগ্রহ বাড়তে পারে। সোনাতলা উপজেলা সদর হাট, বালুয়াহাট,হরিখালী হাট ও পাকুল্লা হাটে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় এসব হাটে খুচরা হিসেবে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। মরিচের বাজার দাম হ্রাসের কারণে কৃষকদের মন ভালো না হলেও খুচরা ক্রেতা সাধারণের মন ভালো। কারণ বর্তমানে বাজার দম কম। কম দামে মরিচ কিনতে পেরে তারা অনেকটা খুশি। এদিকে খুচরা বিক্রেতারা জানান বাজার দাম কম হলেও লাভ আশানুরূপ নয়।