বগুড়া সংবাদ : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার সাইলো সুপার (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা ১১ টায় সাইলোর মুল ফটকের সামনে কর্মবিরতি পালন করেন সেখানে কর্মরত ভুক্তভোগী অর্ধশত ক্যাজুয়াল কর্মচারীবৃন্দরা। কর্মবিরতি চলাকালে সাইলো সুপারের নির্দেশে মুল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়, যেন শ্রমিকরা ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে। এতে করে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে
গনমাধ্যমকর্মীদের কাছে তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রকাশ করে। এরপর তারা সাইলো সুপারের কাছে তাদের দাবীগুলো জানানোর জন্য বিকল্প গেট দিয়ে প্রবেশ করে। কিন্তু সাইলো সুপার তাদের সাথে কোন না বলে এক পয়ার্য়ে তার সহ-কর্মীদের সহয়তায় ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কর্মরত শ্রমিকরা তার সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ করলেও তিনি কোন সাড়া দেন না । এতে করে শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে শন্তিপূর্নভাবে সাইলো সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এর আগে কর্মবিরতিকালে বিভিন্ন দূর্ণীতি, অনিয়ম, ঘুম বানিজ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন, ক্যাজুয়াল কর্মচারীদের মধ্যে খোরশেদ আলম, রবিউল ইসলাম, সুমন হোসেন, এনামুল হক, সাগর হোসেন, নাজমুল হক, বাবুসহ অনেকে। তারা বলেন সাইলো সুপার বিভিন্ন দূর্ণীতি, নিয়োগ ও ঘুষ বানিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত। তিনি একক ক্ষমতা বলে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তমিজউদ্দিন এ্যান্ড বার্দাসকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিমানের টিকিট সহ আট লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু তাকে কাজ না দিয়ে আরও অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে জয় কনষ্ট্রাকশনকে কাজ পাইয়ে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তমিজউদ্দিন এ্যান্ড বার্দাস তদন্ত কমিটির নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। তারা আরও বলেন, মাষ্টার রোলের নিয়ম অনুয়ায়ী আমাদের মজুরি দেওয়া কথা ২২৪ টাকা কিন্তু সাইলো হ্যান্ডেলিং ঠিকাদার না থাকায় প্রতি হাজিরায় সাইলো সুপার ৪৯ টাকা করে কেটে নিয়ে মাষ্টার রোলের শ্রমিকদের ১৭৫ টাকা মজুরি দিচ্ছে যা দুর্নীতির একটা ভয়াল চিএ। অথচ দ্রব্যমুল্য উর্ধ্বগতির এই দিনে একজন শ্রমিকের নূন্যতম মজুরি হওয়া উচিত ৪০০/৫০০ টাকা। আমরা আমাদের করুন অবস্থার কথা সাইলো সুপারকে জানাতে গেলে তিনি কোন কথা না শুনে উল্টো চাকুরি থেকে বের করাসহ মামলার হুমকি প্রদান করেন। আমরা এই দুর্নীতিবাজ সাইলো সুপারের সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক তাকে দ্রত বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে আমাদের ন্যায়্য মজুরি থেকে কেটে নেওয়া পাওয়া বকেয়াসহ সমস্ত মজুরি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আপনাদের
মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবী জানাচ্ছি। উল্লেখ্য,বর্তমান সাইলো সুপার (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সাইলোতে রক্ষন প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় কর্তব্য অবহেলা ও
দুর্ণীতির দায়ে একবার সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইলোতে সরকারি বেতনভূক্ত এক কর্মচারি ক্ষোভের সহিত জানালেন, আমার ৩০ বছরের চাকরি জীবনে এরকম কর্মকর্তা পাইনি। তিনি খুব আত্মঅহংকার নিয়ে থাকেন। কোনো কর্মচারিকে কিছু মনে করেন না তিনি। আর যারা মাস্টার রোলে চাকরি করছেন, তাদের কথা বাদই দিলাম। খবর পেয়ে সান্তাহার পুলিশ ফাড়ির উপ- পরিদশক বকুল হোসেন ও মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে যান। এ বিষয়টি জানতে চাইলে বকুল
হোসেন বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে শ্রমিকদের কথাগুলোর সত্যতার জানার জন্য গনমাধ্যমকর্মীরা সাইলো সুপারের কাছে গেলে তিনি গনমাধ্যমকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন করে কোন তথ্য না দিয়ে উল্টো মামলার করা হুমকি দেন। তাকে বার বার অনুরোধ করার পরও তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার দোহায় দিয়ে বক্তব্য দিবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন।
Check Also
নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে নতুন নির্বাচন কমিশন, নিয়োগ পেলেন যারা
বগুড়া সংবাদ : অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন …