বগুড়া সংবাদ:পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের তোয়াক্কা না করে বগুড়ার নন্দীগ্রামে আবাসিক এলাকায় চলছে রাইস মিল।
পৌর শহরের কচুগাড়ী মাস্টার পাড়ার সেই মিলে প্রতিদিন ধান, সরিষা, হলুদ, মরিচ-মসলা ও আটা ভাঙার কারণে মাত্রাতিরিক্ত শব্দ দূষণের সঙ্গে বায়ুদূষণ হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও পৌর প্রশাসকের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের লিখিত অভিযোগের পরও প্রতিকার মিলছে না। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে দু’দফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাইচ মিল চালাচ্ছেন আব্দুল ওয়াহেদ টুকু।
বুধবার নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হুমায়ুন কবির জানান, আবাসিক এলাকায় রাইস মিলের কারণে জনগণের স্বাস্থ্যঝুকি, পরিবেশ ও শব্দ দূষনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে গিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কচুগাড়ী মাস্টার পাড়া এলাকায় রাইচ মিল স্থাপন করেছেন আব্দুল ওয়াহেদ টুকু। সেখানে জামে মসজিদসহ ঘনবসতি রয়েছে। মিল করার ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থান ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। নিয়মিত মিলে ধান, সরিষা, হলুদ, মরিচ-মসলা ও আটা ভাঙার কারণে শব্দ দূষণসহ বায়ু দূষণে স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্যঝুকিতে আছেন। মাত্রা অতিরিক্ত শব্দের কারণে বিপাকে আছেন আবাসিক এলাকার বসবাসকারীরা।
এ ব্যাপারে গত ৮ অক্টোবর পৌর প্রশাসকের কাছে অভিযোগ হয়েছে। এর আগে গত ২১ এপ্রিল উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কচুগাড়ী মহল্লার মোহাম্মদ হানিফ। প্রতিকার না পেয়ে গত ২৫ আগস্ট জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করা হয়। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন কর্মকর্তারা। অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না থাকায় মিলটি বন্ধ রাখার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরও মিলটি সচল রাখায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর মিলের মালিক আব্দুল ওয়াহেদ টুকুকে কারণ দর্শাতে লিখিত নোটিশ দেয় বগুড়ার পরিবেশ অধিদপ্তর।
সহকারী পরিচালক মাহথীর বিন মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, মিল স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অবস্থান ও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। ঘনবসতি আবাসিক এলাকায় মিল স্থাপন করায় মাত্রা অতিরিক্ত শব্দ দূষণ ও বায়ু দূষণ হচ্ছে। আশপাশে বসবাসরত মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন বিঘ্নিত হচ্ছে মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একদিকে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে স্থানীয়রা স্বাস্থ্যঝুঁকি আছেন। যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) অনুসারে দন্ডনীয় অপরাধ। মিলটি বন্ধ করে সাতদিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হলেও মানা হয়নি।
এ বিষয়ে মিল মালিক আব্দুল ওয়াহেদ টুকুর মন্তব্য পাওয়া যায়নি।