শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার উচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. শেফালী খাতুনকে অপসারণ করার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। বুধবার (০৩জুলাই) দুপুর বারোটায় বিদ্যালয় সংলগ্ন আঞ্চলিক সড়কে উচরং, বেলতা, আয়রা, ঘোলাগাড়ী, সাধুবাড়ী ও মামুরশাহী এই ছয় গ্রামবাসীর ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। এরআগে ওই প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া স্থানীয় শাহবন্দেগী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. সোহেল রানা অভিযোগ করে বলেন, বিগত ২০২০ সালে উচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোছা. শেফালী খাতুন যোগদান করেন। এরপর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে নিজের কব্জায় নিয়ে ¯িøপ প্রকল্পের টাকা, ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের খেলনা সামগ্রী ক্রয়ের টাকাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া টাকা নয়ছয় করেছেন। তাই প্রতিষ্ঠানের কোনো উন্নয়ন হয়নি। এছাড়া শিক্ষার পরিবেশও নষ্ট করে ফেলেছেন তিনি।
উচরং গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, বর্তমানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে বড় ধরণের অনিয়ম করেছেন। নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে কোনো প্রকার সাধারণ সভা ও নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া করছেন তিনি। প্রতিবাদ করায় আমাকেসহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নামে একজন শিক্ষককে দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অথচ ওই অভিযোগটি সম্পুর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
অভিভাবক আব্দুল বারিক সরকার, জাহাঙ্গীর আলম ঝান্নু, হাবিবর রহমান পান্না, সেলিম উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছে। সেদিকে নজর নেই ওই প্রধান শিক্ষকের। তিনি শুধু বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দের টাকা আত্মসাত আর পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া এই প্রধান শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে গিয়ে নিজে কোনো পাঠদান দেন না। শিক্ষকদেরও সেভাবে নির্দেশনা ও তদারকি করেন না তিনি। ফলে প্রতিদিনই শিক্ষার্থী কমছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ওই প্রধান শিক্ষককে অপসারণ করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের নিকট জোর দাবি জানান তাঁরা। তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে চাইলে উচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফালী খাতুন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, যথাযথ নিয়ম মেনেই বিদ্যালয়টি পরিচালনা করছেন তিনি। তাই অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগগুলো সঠিক নয়। এই বিদ্যালয় থেকে আমাকে সরিয়ে দিতেই একটি মহল এই ধরণের কর্মসূচি পালন করেছেন বলে মন্তব্য করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি শুনেছি। তবে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Check Also
১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার কাহালু থানা হানাদার মুক্ত দিবস
বগুড়া সংবাদ : বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভম ও ত্রিশ লক্ষ শহীদের …