বগুড়া সংবাদ :নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে দেশি ফল কালো জাম। এই ফল এখন চলে গেছে দামি ফলের তালিকায়। এক সময় প্রচুর জাম গাছ চোখে পড়লেও এখন তেমন দেখা যায় না। অত্যন্ত ঔষধি গুণ সম্পন্ন পাকা জামের মধুর রসে এখন আর মুখ আগের মতো রঙিন হয় না। জাম গাছ ২০-২৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। এটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। কান্ড সরল, শাখা-প্রশাখা যুক্ত, ছাল ধূসর বর্ণের। পাতা সরল, বৃক্ষক, প্রতি মুতি এটি সবুজ থাকে যা পরে গোলাপি হয় এবং পাকলে কালো বা কালচে বেগুনি হয়ে যায়। এটি খেলে জিহবা বেগুনি হয়ে যায়। স্বাদ মধুর ও কষ্টা ভাবযুক্ত। ফলের মজ্জা হালকা গোলাপি ও রসাল।
হারিয়ে যাচ্ছে ফলদ ও ভেজষ গুণ সম্পন্ন কালো জাম
এ ব্যাপারে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আবাসিক ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন বলেন, যাদের ডায়বেটিস আছে তাদের জন্য জাম ফলটি বেশ উপকারী। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ফল স্মৃতি শক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। ফলটিতে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্রি র্যাডিক্যালস তৈরিতে বাধা দেয়। জাম রক্তের শর্করা ও কোলস্টেরলের মাত্রা কমায়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে, বিশেষ করে জামের বীজ ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জামে প্রচুর আঁশ রয়েছে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। জাম রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। শরীরে দূষিত কার্বণ ডাই-অক্সাইডের মাত্রা কমিয়ে দেহের প্রতিটি প্রান্তে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়। জাম বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। জামে স্যালিসাইলেট নামক এক ধরনের উপকরণ আছে, যা ব্যথানাশক হিসেবেও কাজ করে। ডায়াবেটিসের রোগীরা মৌসুমে প্রতিদিন ৮-১০টি জাম খেতে পারেন।
উপজেলার সান্তাহার রেলগেটে জাম কিনতে আসা নেহাল আহম্মেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, জাম ভারতবর্ষ থেকে সারা দুনিয়াতে ছড়িয়েছে। আমাদের এ অঞ্চলে প্রধানত দুই জাতের জাম পাওয়া যায়। জাত দুটি হলো ক্ষুদি জাত- খুব ছোট এবং মহিষে জাত-বেশ বড় ও মিষ্টি। এটি বর্ষাকালে পাওয়া যায়। ফলের গা কালো এবং খুব মসৃণ পাতলা আবরণযুক্ত। ফলের বহিরাবরণের ঠিক নিচ থেকেই গাঢ় গোলাপী রংয়ের টক মিষ্টি শাস।
জাম বিক্রেতা এনামুল মিয়া বলেন, প্রতি কেজি জাম ১ শত টাকা থেকে ১শত ২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। বাজারে জামের প্রচুর চাহিদা আছে কিন্তু সেই তুলনায় জাম পাওয়া যাচ্ছে না।