সর্বশেষ সংবাদ ::

বগুড়ায় স্বামী সন্তানের মৃত্যুর পর এক নারীকে অর্থ সম্পদ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ

বগুড়া সংবাদ :বগুড়ার গাবতলী উপজেলার আটবাড়িয়া গ্রামের ইসরাত জাহান জেমি নামে এক নারীর স্বামী হৃদরোগে মারা যাওয়ার তিন মাসের মাথায় একমাত্র দেড় বছর বয়সের সন্তানও নিউমুনিয়ায় মারা যায়। স্বামী সন্তানের মৃত্যুর পর ওই নারীকে তার শ^শুড়বাড়ি থেকে নির্যাতন করে বের করে দেয়। স্বামীর অর্থ সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে করা হয় নানা চক্রান্ত। গতকাল রবিবার দুুপুরে ওই নারী বগুড়া প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

ইসরাত জাহান জেমি জানান,২০২০ সালের আগষ্ট মাসে তার বিয়ে হয় একই এলাকার খুপি মন্ডলপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য সাইদুর রহমান নান্নুর ছেলে আরিফুর রহমান সোহেলের সাথে। সোহেল একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। গত ৯ সেপ্টেম্বর সোহেল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকালে মৃত্যুবরন করেন।

আমি একমাত্র দেড় বছর বয়সের সন্তান জেনানকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করতে থাকি। আমার স্বামী তার বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মধ্যে তিনটিতে আমাকে নমিনি করে এবং ২টিতে আমার দেওরকে নমিনি করে। আমার শশুড় আমার স্বামীর একাউন্ট থেকে টাকা তুলে তাকে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন।

আমি তাতে রাজি না হওয়ায় আমার শশুড় এবং ননদসহ শশুড় বাড়ির লোকজন আমার উপর অত্যাচার করতে থাকে। আমার বেশ কিছু টাকা স্বর্নালংকার এবং মোবাইল ফোন চুরি করে আমার ননদরা। এক পর্যায়ে আমি আমার স্বামীর একাউন্ট থেকে টাকা তুলে না দেওয়ায় গত ৫ অক্টোবর আমাকে প্রচন্ড মারধর ও নির্যাতন করতে থাকে।

আমার উপর নির্যাতনের কথা প্রতিবেশিদের মাধ্যমে আমার ভাই শহিদুল ইসলাম জানতে পেরে পরেরদিন আমার শশুড়বাড়িতে আসেন এবং আমার জীবনের নিরাত্তহীনতার কারনে আমাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যান। এর ২দিন পর ৭ অক্টোবর সন্ধায় আমার ভাই শহীদুল ইসলাম বাড়ি থেকে গাবতলী যাওয়ার পথে সোনারায় ইউপি ভবন এলাকায় ওতপ্রেতে থাকা আমার শশুড়ের আত্মীয় গাবতলীর কাগইল দড়িপাড়া এলাকার চিহিৃত দুস্কৃতিকারী আবু আছাদের সহায়তায় আমার ভাইকে অপহরন করে আমার শশড়বাড়িতে নিয়ে গিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে এবং মারধর করে।

আমার ভাইকে সাদা স্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলে এবং আমার ভাইয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আমার ভাইকে উদ্ধার করে।

আমার ভাইকে অপহরন এবং আমাকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ৮ অক্টোবর গাবতলী থানায় আমার ভাই একটি মামলা করেন। গাবতলী থানা পুলিশ মামলার সুষ্টু তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন।

এরই এক পর্যায়ে আমার ছেলে নিউমুনিয়া রোগে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার জন্য আমার স্বামীর হিসাব নম্বর থেকে টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারি আমি যাতে টাকা তুলতে না পারি সেজন্য আমার শ^শুড় ব্যাংকে নানা প্রকার মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। যার কারনে টাকা তুলতে পারিনা।

আমার ছেলে গুরুতর অসুস্থ্য হওয়ায় আমার দুই ভাই শহীদুল ইসলাম ও রাজু আমম্মেদ ঢাকায় নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করায়। কিন্তু আমার শশুড় বা শশুড়বাড়ির কেউ একবারের জন্যও নাতিকে দেখতে হাসপাতালে যাননি। ঢাকায় চিৎিসাধীন অবস্থায় গত ৯ ডিসেম্বর আমার সন্তান মারা যান। আমি স্বামী ও সন্তানের শোক সইতে পারছিলাম না।

এদিকে আমার শ^শুড় আমাকে আমার স্বামীর অর্থ সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে আবু আছাদের যোগসাজসে চক্রান্ত করছেন। ফলে আমি দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। আমার স্বামী তার ভাইকে নমিনি করে যে টাকা রেখে গেছেন তা তুলে আমাকে দেয়ার কথা কিন্তু দেয়া হচ্ছেনা। সম্পত্তি থেকেও আমাকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

Check Also

বগুড়ায় ১০নং ওয়ার্ড জামায়াতের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

বগুড়া সংবাদ : শনিবার বিকেলে বগুড়া শহরের নহমাননগর ক্যাডেট মাদরাসা মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১০ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *