
বগুড়া সংবাদ:
ধুনটে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে মামলায় বিএনপি
নেতাসহ দিনকালের সাংবাদিকও আসামী
বগুড়ার ধুনটে আওয়ামী লীগের মশাল মিছিলের মামলায় আওয়ামীলীগ নেতা, বিএনপির নেতা সহ দিনকালের সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ধুনট থানার ওসি সহিদুল আলম।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, বিএনপি নেতা রিপন শেখ তার মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আসিব ইকবার সনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র এজিএম বাদশা, এলাঙ্গী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ তারেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি আব্দুস সোবহান সহ ৯৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় তারা পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র, ককটেল, লাঠি নিয়ে বাদীকে আক্রমন করে। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটায়।
মামলার নথি থেকে আরো জানা যায়, মামলায় ৯ নম্বর আসামী করা হয়েছে দৈনিক দিনকালের ধুনট উপজেলা সংবাদদাতা ও ধুনট মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক ইমরান হোসেন ইমনকে এবং ২৬ নং আসামী করা হয়েছে গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারন সম্পাদক সানোয়ার হোসেন বিপুলকে। এছাড়া ওই মামলার আসামী গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটনকে সোমবার বিকেলে ঘটনার আগেই সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের উপর হামলা, গাড়ী ভাংচুরের মামলায় গ্রেফতার করে মঙ্গলবার জেল হাজতে প্রেরন করা হলেও তাকেও মামলার আসামী করা হয়েছে।
মামলার আসামী ধুনট মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং দৈনিক দিনকালের ধুনট উপজেলা প্রতিনিধি ইমরান হোসেন ইমন জানান, কখনও কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। স্বাধীন সাংবাদিকতা করি। যখন আওয়ামীলীগের মশাল মিছিল হয় তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ওসি ফোন করে জানাই এবং আমার নিজস্ব অনলাইন পোর্টালে ছবিসহ নিউজ আপলোড করি। আর তখনই একটি মহলের একজন ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে আসামী করেছে। পরে বিষয়টি শুনেছি, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর পাশা নাকি আমাকে আসামী হিসেবে নাম দিয়েছেন।
তবে এবিষয়ে জানতে ধুনট উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর পাশার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ক্ষুদে বার্তা দিলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
মামলার অন্য আসামী ছানোয়ার হোসেন বিপুল জানান, আমি গোসাইবাড়ী ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল মুনছুর পাশা আমার বাড়ীর পাশেই বিয়ে করেছে। আওয়ামী লীগ থাকা অবস্থায়ও তিনি আমার এলাকার মামলার দালালী করেছে অন্যায় ভাবে। এ কারনে বাদীকে ম্যানেজ করে আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের মামলার সাথে আমার নাম দিয়েছে।
গোঁসাইবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিএনপির বিরুদ্ধে যদি বিএনপিই মামলা করে তাহলে কোথায় দাড়াবো আমরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই মামলায় মিথ্যা আসামী করার প্রতিবাদ জানিয়েছি।
গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিয়াকত আলী লিটনের স্ত্রী রিক্তা বেগম জানান, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। তবুও সোমবার বিকেল ৫টায় পুলিশ ধরে নিয়ে গেল এবং অজ্ঞাত আসামী হিসাবে কয়েক বছর আগের মামলায় জেল হাজতে মঙ্গলবার পাঠানোর পর বুধবার ঘটনার সময় সাড়ে ৭টা দেখিয়ে আরেকটি মামলায় জড়ালো।
এবিষয়ে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, বিএনপির এক কর্মী মামলা করেছে। তখন আমি থানায় ছিলাম না। তবে মামলা তদন্ত করে দেখবো আসলেই কারা জড়িত ছিল। অন্যায় ভাবে কাউকেই হয়রানী করা যাবে না। তবে ওসি বলেন, যখন ঘটনা ঘটে তখন দিনকালের প্রতিনিধি আমাকে ফোন দিয়ে বলেছিল কি যেন ঘটছে। পরে দ্রæত ফোর্স নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। #