বগুড়া সংবাদ :বগুড়া সদর থানা পুলিশের অভিযানে চাঞ্চল্যকর সাবেক কাউন্সিলর পুত্র ও সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ হত্যা মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটন ও ঘটনার সহিত সরাসরি জড়িত ০৩ (তিন) জন আসামী গ্রেফতার। পূর্ব শত্রুতার জেরে বগুড়ায় সাবেক কাউন্সিলরের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ মণ্ডল হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷
মঙ্গলবার রাতে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বগুড়া শহরের নিশিন্দারা পূর্ব খাঁপাড়া এলাকার মিলু শেখের ছেলে সাকিব শেখ ও সানমুন শেখ ওরফে সালমন এবং একই এলাকার হাতেম আলীর ছেলে হিমেল শেখ। এদের মধ্যে সাকিবের নামে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জেলা পুলিশের পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান৷
গত ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সুলতানগঞ্জপাড়া এলাকায় বগুড়া পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী আরিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, আরিফের ভাগ্নে মুহিমের সাথে কথা-কাটাকাটির জের ধরে গত ৭ অক্টোবর সাকিবকে চাকু মেরে গুরুতর আহত করে আরিফ। এ ঘটনায় সাকিবের বাবা মিলু বাদী হয়ে আরিফকে প্রধান আসামি করে বগুড়া সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে আরিফকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান ১৮ দিন থাকার পর আরিফ জামিনে মুক্ত হলে সাকিব ও তার সঙ্গীরা মিলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ার আরজু ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের সামনে হাসুয়া, এস এস পাইপ ও লোহার রড নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। এসময় আরিফ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তার পথরোধ করে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা প্রথমে জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকে। এমনকি তারা হিলি বর্ডার দিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ারও চেষ্টা করে। কিন্তু কোন উপায় না পেয়ে তারা পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেয়। তাদের পরিকল্পনা ছিল মসজিদে পূর্ব থেকে অবস্থানরত তাবলীগ জামাতের মুসল্লি সেজে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে আত্মগোপন করবে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়া সদর থানার টিম, এন্টি টেররিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা বিভাগের সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
স্নিগ্ধ আখতার বলেন, আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত বাকি পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ, সদর থানার ইন্সপেক্টর(তদন্ত) শাহীনুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।