বগুড়া সংবাদ : বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভম ও ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পৃথিবীর মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নামক আমাদের প্রিয় মাতৃভুমি। দেশ আজ স্বাধীন। স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক গৌরবময় কাহিনী ও নারকীয় হত্যাকান্ড কিংবদন্তি হয়ে অতীত গর্ভে বিলীন হয়ে
যাচ্ছে। স্বাধীনতার ইতিহাসে দেশের অন্যান্য থানার মতো বগুড়া জেলার কাহালু থানাতেও এমনি অনেক লোমহর্ষক করুন ইতিহাস রয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর বগুড়ার কাহালু থানা হানাদার মুক্ত দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ক্ষত-বিক্ষত পাকহানাদার বাহিনী আর্তœসমর্পন করায় স্বাধীনতার ৩ দিন আগে ১৯৭১ সালে এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা কাহালু থানাকে শক্র মুক্ত করেন। কাহালু থানা ছিল পাকহানাদার বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। পাক সেনা ও মিলিশিয়া বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিতভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রাম থেকে গ্রামান্তর আগ্নিসংযোগ,
লুটপাটসহ নির্বাচার হত্যাকান্ড চালিয়েছে। এসব খন্ড খন্ড কাহিনীর মধ্যে দিয়ে বগুড়ার কাহালু থানা হানাদার মুক্ত হয়। কাহালু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নজিবর রহমান জানান, ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অত্র উপজেলার বামুজা, জয়তুল, নশিরপাড়া ও বীরপাল্লা সহ বিভিন্ন স্থানে পাকসেনাদের সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ খন্ড খন্ডযুদ্ধ হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে বগুড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাকসেনারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। অবশেষে মেজর জাকির, কর্নেল তোজাম্মেল সহ প্রায় ১৬ জন পাকসেনা ১৩ ডিসেম্বর সকালে বগুড়া থেকে পালিয়ে এসে কাহালু
চারমাথায় যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর কমান্ডার কাহালুর জামগ্রাম ইউনিয়নের পানাই গ্রামের টগবগে যুবক বীরমুক্তিযোদ্ধা কাহালু ডিগ্রী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মরহুম আলহাজ্ব হোসেন আলীর কাছে অস্ত্র সহ আর্তœসমর্পন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সাথে পাক-হানাদারদের সাথে লড়াইকরে স্বাধীনতার ৩ দিন আগে ১৯৭১ইং সালের ১৩ ডিসেম্বর কাহালু থানাকে হানাদার মুক্ত করতে সমক্ষ হয়েছিলেন। কাহালু উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোছাঃ মেরিনা আফরোজ জানান, হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে সকাল ১০টায় কাহালু উপজেলা পরিষদ চত্বর হতে পৌর এলাকার প্রধান প্রধান সড়কে এক বর্ণাঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হবে।