সর্বশেষ সংবাদ ::

রাজারবাগে পুলিশ সদস্যদের বিক্ষোভে দাবি গুলির নির্দেশদাতা পুলিশ কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করা হোক

বগুড়া সংবাদ :ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আতঙ্কে ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন পুলিশ সদস্যরা। গত কয়েকদিন সরকারের পতনের দাবিতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি অনেক পুলিশ সদস্যও নিহত হয়েছেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার কয়েক’শ থানা ও পুলিশ স্থাপনা অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর করা হয়েছে। এমন অবস্থায় জীবনের শঙ্কা, থানায় হামলা ও সহকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে পুলিশ সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বিক্ষোভও করেন হাজার হাজার পুলিশ সদস্য ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ সময় ত্রাা বলেন, আমরা জীবনের নিরাপত্তা চাই। আমরা ছাত্র-জনতার উপর গুলি করতে চাই না। আমরা কাউকে হত্যা করতে চাইনি। যারা গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন তারা আজ পালিয়ে গেছেন। ওই নির্দেশ দাতা পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন, এসবির প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন উর-রশীদ, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ও মেহেদি হাসান, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুর রহমান, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদারসহ অন্যান্য যারা আছেন তাদের গ্রেফতার করে কঠোর বিচার করা হউক।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কনস্টেবল আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মানুষ খুন করতে পুলিশের চাকরিতে আসিনি। আমরা নিজেরাও খুন হতে চাই না। কিন্তু এসবির প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিবির সাবেক প্রধান হারুন উর-রশীদ, ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার বিশ্বাস ও মেহেদি হাসান, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুর রহমান, পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদারসহ অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাদের সরাসরি গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এসব কর্মকর্তাকে গ্রেফতার এবং ছাত্র-জনতাকে হত্যার বিচার চাই। এসব কর্মকর্তার জন্য আমাদের অনেক পুলিশ সদস্য আজ খুন হয়েছেন, এরও দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এসব বিসিএস কর্মকর্তারা শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতেন। তারা ওয়্যারলেসে একটি ম্যাসেজ দিলে আমরা নিরাপদে যেতে পারতাম এবং এভাবে মরতে হতো না। আমরা কোন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনে থাকতে চাই না। আমরা পুলিশ বাহিনীর প্রধানের অধীনে থাকতে চাই।

গতকাল মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা, পুলিশ সদস্য খুনসহ স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দেশে প্রায় ৪৫০টি থানা আক্রমণ করে অগণিত পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে; যা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সামিল। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশের অধস্থন কর্মচারী সংগঠন মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দেশ ত্যাগ ও পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশের পর পুলিশ সদর দফতরের শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেদের বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। পুলিশ সদর দফতর থেকে যারা রাজধানীসহ সারাদেশে সাধারন ছাত্র-ছাত্রী ও জনতাকে নিয়ন্ত্রণ ও কঠোর হস্তে দমনের আদেশ দিতেন সেই অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুর রহমান, ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ারদারসহ একাধিক কর্মকর্তাদের এখন পাওয়া যাচ্ছে না।

Check Also

দুপচাঁচিয়ায় মাদ্রাসার সুপারকে মারপিট করে চাঁদা দাবীর প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারী পরিবার কল্যান সংস্থার মানববন্ধন

বগুড়া সংবাদ :  দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের জোহাল মাটাই ও টেমা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *