সর্বশেষ সংবাদ ::

বগুড়ায় স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার

বগুড়ায় স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ করায় মসজিদে আশ্রয় নিয়েও শেষ রক্ষা হলো না কাবিলার

বগুড়া সংবাদ : বগুড়া জিলাদার ওরফে কাবিলা (৩২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (২ আগস্ট) ভোরে সদরের এরুলিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা জানায়, পেশায় মাংস বিক্রেতা রতন শুক্রবার ভোরে শহরের গোদারপাড়ায় দোকানে যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। পথিমধ্যে বাড়ির সামনে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। প্রাণ বাঁচাতে রতন এলাকার একটি মসজিদে আশ্রয় নিলে দুর্বৃত্তরা সেখানেও তাকে কুপিয়ে রেখে চলে যায়।

স্ত্রীকে ধর্ষনের ঘটনা জেনে গত বুধবার আরিফুল ও আমিন নামের দুই যুবককে মারপিট করে রতন। এর জের ধরেই রতনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় বলে দাবি করেন নিহতে মা শিরানা বেওয়া ও বোন সফুরা বেগম।

নিহতের মা ও বোন জানান, আরিফুল রতনের ভাগিনা। আর আমিন আরিফুলের বন্ধু এবং ভগ্নিপতি। রতন ছয় বছর আগে বিয়ে করে। তিন বছর আগে থেকে আরিফুল রতনের স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছিল। কিছুদিন আগে আরিফুল রতনের স্ত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করে। এরপর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় তাকে ধর্ষণ করে।

রতনের স্ত্রী জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে একটি ১০০ টাকার নোট জানালা দিয়ে তার ঘরে পড়ে। তিনি টাকা হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে দেখে আরিফুল ও আমিন দাঁড়িয়ে আছে। তারা ঘরে প্রবেশ করতে চায়। এমন সময় রতন বাড়িতে আসলে আরিফুল ও আমিন পালিয়ে যায়। পরে রাতে রতনকে তার স্ত্রী পূর্বের ঘটনাসহ বিস্তারিত জানায়। পরদিন দুপুরে আরিফুল ও আমিন গ্রামের রাস্তায় বসে ছিল। সেসময় রতন পিছন থেকে গিয়ে লাঠি দিয়ে দুইজনকেই মারপিট করে। আরিফুল বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ধর্ষণের বিষয়ে রতনকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার রতন আদালতে গিয়ে আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করেন। ধর্ষণ মামলা দায়ের করার জন্য রোববার স্ত্রীকে সাথে নিয়ে যেতে বলেন তার আইনজীবী।

নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘আরিফুল ও আমিন বুধবার দুপুরের পর থেকে রতনকে হুমকি দিয়ে আসছিল। শুক্রবার ভোরে রতন গোদারপাড়া বাজারে মাংসের দোকানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। এরপরই তারা রতনকে ধাওয়া করে মসজিদের ভিতর কুপিয়ে হত্যা করে।’

এরুলিয়া বড় জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ক্বারী মোহাম্মদ আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমি ফজরের আজান দিয়ে মসজিদের দরজা খুলে দিয়ে ওয়াশ রুমে যাই। এরমধ্যেই মজসিদের বারান্দায় শব্দ শুনতে পাই। ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনে পড়ে থাকতে দেখে মসজিদের মাইকে ঘটনাটি গ্রামবাসীকে জানাই। পরে গ্রামের লোকজন এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) আব্দুর রহিম বলেন, ‘নিহত রতনের স্ত্রীকে ইতিপূর্বে ধর্ষণের জের ধরেই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে। ঘটনার পর থেকে আরিফুল, আমিন ছাড়াও আরও একজন পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে। নিহত রতনের মরদেহ মর্গে রয়েছে।’

Check Also

দুপচাঁচিয়ায় মাদ্রাসার সুপারকে মারপিট করে চাঁদা দাবীর প্রতিবাদে শিক্ষক-কর্মচারী পরিবার কল্যান সংস্থার মানববন্ধন

বগুড়া সংবাদ :  দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের জোহাল মাটাই ও টেমা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *