বগুড়া সংবাদ : বগুড়ায় সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে কর্মরত এক নারী চিকিৎসক মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ওই চিকিৎসকের নাম রুমানা শারমিন রূম্পা। তিনি ওই হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের সহকারী রেজিস্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিক আমিন কাজল। এর আগে, গত ১৯ জুন রাতে বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার নিজ বাড়িতে বিপুল সংখ্যক ঘুমের ট্যাবলেট সেবন করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবণতি হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় ডা. রূম্পা সেখানে মারা যান।
স্থানীয়রা জানান, বৃন্দাবনপাড়ার ‘জমিদার ভিলা’ নামক বাসাটি ডা. রূম্পার পৈত্রিক নিবাস। তাঁর বাবা প্রয়াত আব্দুল কাইয়ুম খলিফা জমিদার পরিবারের সন্তান। ডা. রূম্পা তাঁর বাবার বাড়িতেই চিকিৎসক স্বামী বগুড়া টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক(বায়ো-ক্যামিস্ট্রি) ডা. সাজেদুল ইসলাম সুজন, বৃদ্ধা মা রওশন আরা বেগম ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে থাকতেন।
ডা. রূম্পার আত্মহত্যার বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন বক্তব্য গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি। তাঁর বৃদ্ধা মা রওশন আরা বেগম ছাড়া বাড়িতে অন্য কেউ নেই। চিকিৎসক স্বামী সুজন ঢাকায় লাশের সঙ্গে অবস্থান করছেন। ডা. রূম্পার চাচাতো ভাই নিশান খলিফার বরাত দিয়ে ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, ওই চিকিৎসক দম্পতির একমাত্র মেয়ের লেখাপড়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ডা. রূম্পা তার মেয়েকে শাসন করায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। সেই অভিমানে মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন করেন রূম্পা।ডা. কাজল বলেন, চিকিৎসক হিসাবে ডা. রূম্পা অনেক ভালো ছিলেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের তিনি খুবই প্রিয় চিকিৎসক। তাঁর মানসিক দৃঢ়তাও যথেষ্ট ছিলো। তিনি হঠাৎ এমনটি করবেন তা কেউ বিশ্বাসসই করতে পারছেনা। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে লাশ সরাসরি বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে শুক্রবার বাদ এশা জানাযার নামাজ শেষে লাশ বাড়িতে নেওয়া হবে। পরেরদিন সকালে বৃন্দাবনপাড়া ঈদগাহে দ্বিতীয় জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে। বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানকার চিঠি পেয়েই তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি সদর থানা পুলিশ অবগত হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বগুড়ায় পৌঁছবে। ঘটনার জানার পর তাঁর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে কাজ শুরু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।