
শেরপুর (বগুড়া), ১০ আগস্ট ২০২৫: বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় করতোয়া নদীর তীব্র ভাঙনে হাজারো মানুষ তাদের সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। উপজেলার মির্জাপুর ও সুঘাট ইউনিয়নের একাধিক গ্রামে এই ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে, যার ফলে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রবল স্রোতের কারণে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। বিশেষ করে মির্জাপুর ইউনিয়নের কাশিয়াাবালা এবং সুঘাট ইউনিয়নের বিনোদপুর উত্তরপাড়া ও মোহনা এলাকায় ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বিনোদপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মাজেদা খাতুনের শেষ আশ্রয়স্থলটুকুও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, যা তাকে অসহায় করে তুলেছে। এছাড়া, এই গ্রামের অন্তত ৫০টি পরিবার তাদের বসতভিটা হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। অনেকের বাড়ির অর্ধেক ইতিমধ্যেই নদীতে ধসে পড়েছে। নদী ভাঙনের কবলে শুধু বসতবাড়িই নয়, পড়েছে আবাদি জমিও। অনেক কৃষকের শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এর ফলে তাদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। কাশিয়াাবালা এলাকায় একটি এতিমখানা, একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা এবং এলাকার একমাত্র কবরস্থানও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙন দেখা দিলেও এটি প্রতিরোধে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাদের মতে, বাঙালি নদী খননের ফলে করতোয়ার স্রোত আরও তীব্র হয়েছে, যা ভাঙনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দ্রুত নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন এবং জরুরি ত্রাণ সহায়তার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে। নদীর ভাঙনের কারণে শুধু মানুষের জীবনই নয়, এলাকার অবকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মির্জাপুর-জোড়গাছা আঞ্চলিক সড়কের একটি বড় অংশ ইতিমধ্যেই নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
Bogra Sangbad সত্য সন্ধানে আমরা