বগুড়া সংবাদ: গতকাল ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ইং তারিখ ছিল সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর ৪২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। ৪২তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে-ন্যায্য মজুরি ও গণতান্ত্রিক শ্রম আইনসহ শ্রমিকদের রেশন-আবাসন ও চিকিৎসা সেবা পাবার অধিকার আন্দোলন সংগ্রামের পথেই আদায় করতে হবে এই আহŸানে আজ ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ সকাল ১১ টায় সাতমাথায় র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি সাইফুজ্জামান টুটুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ বগুড়া জেলা সভাপতি কমরেড সাইফুল ইসলাম পল্টু সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক কমরেড নব কুমার কর্মকার, শ্রমিক ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সহ-সভাপতি সুরেশ চন্দ্র দাস মনো, সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা শ্যামল বর্মন, সংগাঠনিক সম্পাদক সানোয়ার বাবু, দপ্তর সম্পাদক আবু রায়হান, প্রচার সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
কমরেড সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন- স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে দেশের উন্নয়নে পদœা সেতু, মেট্ট্রোরেল, স্মার্ট বাংলাদেশ এর নানা বয়ান প্রতিদিন প্রচারিত হচ্ছে অথচ এই উন্নয়ন আর অগ্রগতির নিয়ামক শক্তি শ্রমিক তাদের ন্যায্য মজুরি এখনও নিশ্চিত হয়নি। ১০২টি প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতের অন্তত ৬২টিতে ঘোষিত মজুরি কাঠামো নেই। রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতের গার্মেন্টস শ্রমিরা ন্যূনতম মজুরি ২৪ হাজার টাকা দাবি করছে অথচ দাবির অর্ধেক ১২,০০০/-টাকা বেতন নির্ধারন করেছে সরকার। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে মজুরির কোন ন্যূনতম নীতিও নেই। শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক শ্রম আইনের দাবি উপেক্ষিত। যতটুকু আইন আছে তারও কার্যকারিতা নেই। শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতির জন্য নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র তাও প্রদান করা হয় না। কাজ করতে এসে প্রতিবছর হাজার হাজার শ্রমিক মৃত্যুবরণ করে কিন্তু তাদের কর্মক্ষেত্রে জীবনের নিরাপত্তা নেই, কর্মক্ষেত্রে নিহত-আহত হলে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা আর পুনর্বাসনের দাবি উপেক্ষিত তাই আন্দোলন ছাড়া শ্রমিকদের মুক্তি হবে না।
শ্রমিক নেতা কমরেড নব কুমার কর্মকার বলেন – শ্রমিকরা দেশের শিল্প বা কারখানা বাঁচিয়ে রাখতে সংগ্রাম করে জীবন দিচ্ছে; তারা তাদের সকল জীবনীশক্তি ক্ষয় করে উৎপাদনের চাকাকে সচল রাখছে, উন্নয়নের গতিকে ধরে রাখছে কিন্তু তারা মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারছেন। তাদের থাকার ঘর নেই, তিন বেলা মানসম্মত খাবার জোটে না, তাদের রেশনের দাবি উপেক্ষিত। চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল নাই, তাদের সন্তানের লেখাপড়ার কোন ব্যবস্থা নেই। তাই এই অবস্থার পরিবর্তন করতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করতে শ্রমিকদের প্রতি আহŸান জানান।
সমাবেশে অন্য নেতৃবৃন্দ বলেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট তার জন্মলগ্ন থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ও সচেতন করার সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। শ্রমিক ফ্রন্ট মনে করে আন্দোলন সংগ্রামের পথেই গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, ন্যায্য মজুরি, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার আদায় ও সুবিধাবাদী ট্রেড ইউনিয়নের বিপরীতে বিপ্লবী ধারার ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে শ্রমিকদের সমস্যা সেখানেই সংগঠন এবং আন্দোলন গড়ে তুলে দাবি আদায় করতে হবে। আর এই শ্রমিক আন্দোলন জোরদার করতে নেতৃবৃন্দ শ্রমিক ফ্রন্টের পতাকাতলে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহŸান জানান।