সর্বশেষ সংবাদ ::

বিপর্যস্ত আ.লীগ , শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগে

বগুড়া সংবাদ :   ছাত্রজনতার গণ-আন্দোলনের মুখে শুধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের ঘটনা মানতে পারছেন না আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। মন্ত্রিসভার সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, জনরোষের মুখে সবাইকে রেখে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার ঘটনায় তারা হতাশ, বিপর্যস্ত ও ভেঙে পড়েছেন। তারা মনে করছেন, শেখ হাসিনার একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত এবং জেদের কারণে দল ও নেতাকর্মীরা বিপদে পড়েছেন। তিনি নিজের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও অন্যদের রেখে গেছেন বিপদে।

বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভার ছয়জন সদস্য এবং কেন্দ্রীয় কমিটির পাঁচ নেতা গণমাধ্যমকে জানান, শেখ হাসিনা সোমবারই দেশ ছাড়বেন, এটা তারা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি। এ ছাড়া তিনি পদত্যাগ করতে পারেন, এমন কোনো ইঙ্গিতও দেননি। তিনি দেশ ছেড়ে যদি যাবেনই, তাহলে শেষ মুহূর্তে দলের নেতা-কর্মীদের কেন আন্দোলনকারীদের মুখোমুখি দাঁড় করালেন?

সোমবার দুপুরের দিকে শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর শোনার পর মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের নেতাকর্মীরা অনেকটা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। এরপর মন্ত্রিসভার অধিকাংশ সদস্য ও নেতাকর্মী নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকেন। অবশ্য পরিস্থিতির কারণে দু-একজন রোববার রাতে ও গতকাল সকালে দেশ ছেড়েছেন। কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের দেশের বাইরে পাঠিয়েছেন।

শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার দুজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত রোববার রাতে কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন; কিন্তু এটি আইনে নেই বলে তিনি উড়িয়ে দেন।

মন্ত্রিসভার আরেকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ রকম কিছু ঘটবে, সেটি চিন্তায় ছিল না। তবে পরিস্থিতি ভালো মনে না হওয়ায় সাময়িক সময়ের জন্য স্ত্রী-সন্তানকে গত রোববার বিদেশে পাঠিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেই তাদের ফিরিয়ে আনা হবে, এমন ভাবনা ছিল। কিন্তু সবকিছু ওলট-পালট হয়ে গেছে।

প্রভাবশালী আরেকজন মন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর পর থেকেই সরকারপ্রধান হিসেবে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শেখ হাসিনা। তারা বোঝানোর চেষ্টা করেও সফল হননি। এখন যা হওয়ার তা-ই হয়েছে।

আওয়ামী লীগের পাঁচজন সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শেখ হাসিনা দেশে থেকে কারাগারে গেলে দলের নেতাকর্মীরা এতটা বিপদে পড়তেন না।

একজন সংসদ সদস্য বলেন, প্রয়াত স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের পতন হয় গণ-অভ্যুত্থানে। কিন্তু তিনি দেশ ছেড়ে পালাননি; বরং জেলে গেছেন। শেখ হাসিনা দেশের প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হয়ে কীভাবে নেতা-কর্মীদের রেখে বিদেশে চলে গেলেন, এটা মাথায় আসছে না। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেওয়া দল আওয়ামী লীগের এমন বিপর্যয় হবে, তা মেনে নেওয়া যায় না।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা গত রোববার সকালে দেশে আসেন। গতকাল তাকে সঙ্গে নিয়েই দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। আর শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ আগে থেকেই ভারতে অবস্থান করছেন। ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের বাইরে থাকেন। শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিও আগেই বাংলাদেশ ছেড়েছেন।

 

Check Also

দোকান ঘর দখলের পাল্টা অভিযোগে নূরে জান্নাতুল ফেরদৌসীর সাংবাদিক সম্মেলন

বগুড়া সংবাদ :বগুড়া শহরের গালাপট্রিতে দোকানঘর দখলের প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *