বগুড়া সংবাদ : নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করার অভিযোগে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কেশরতা গ্রামে পিকনিকের খিঁচুরিতে ছাগলের ছাগলের বিষ্ঠা ও ময়লা দিয়ে খাবার নষ্ট করায় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) ফিরোজ হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিন।
জানা যায়, আদমদীঘিতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ২য় ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে আচরণবিধি বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিউটি করছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। গত রোববার (১৯ মে) রাতে সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ মিলে পিকনিকের আয়োজন করে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক লোকজন দেখে গাড়ি থামিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে তার সাথে থাকা গাড়ির চালক হযরত আলীকে রাস্তার আবর্জনা উঠিয়ে খিচুড়ির ডেক্সির ভিতর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ডের নির্দেশ পেয়ে ড্রাইভার সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা খাবারের মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠা ও বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন সেখানে উপস্থিত সকলে। তাদের দাবি তারা যদি কোনো অন্যায় করে থাকে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু রান্না করা খাবারের মধ্যে আবর্জনা দেওয়া মোটেও কাম্য নয়। খাবার নষ্ট করে দিয়ে স্থান ত্যাগ করে চলে আসেন। একজন বিচারকের প্রয়োজনীয় আইন প্রয়োগ না করে অমানবিক ভাবে ঘটানো এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ” রান্না করা খিচুড়িতে ছাগলের বিষ্ঠা ও ময়লা দিলেন এসিল্যান্ড” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের নজরে আসলে জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিনকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে তিনি গতকাল বুধবার দুপুর দুইটার দিকে ওই গ্রামে গিয়ে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত গ্রামবাসীর মৌখিক ও লিখিত জবানবন্দি গ্রহন করেন। এ সময় গ্রামবাসী অভিযুক্ত সহকারি কমিশনার (ভুমি) এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করেন। সরেজমিন তদন্তের সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ এবং সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর ওই তদন্ত কর্মকর্তা বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারি কমিশনার (ভুমি) ফিরোজ হোসেন ও তার গাড়ি চালক হযরত আলীর বক্তব্য গ্রহন করেন।
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আফসানা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি নির্বাচণী আচরণবিধির মধ্যে পড়লেও ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারকের ওই সিদ্ধান্তটি অমানবিক হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে উর্ধতন কর্মকর্তার নিকট জমা দেওয়া হবে।