বগুড়া সংবাদ : যেখানে নানা ধরনের ফুল দোল খায় বাসাতে। বিশাল পুকুরে স্পিড বোর্ডে ভাসে মানুষ। সবুজ বনানীর ওপর পাখ পাখালির ওড়াউড়িও দেখা যায়। মনোরম ও প্রাকৃতিক পরিবেশে স্ব-পরিবারে সময় কাটানোর একটি উপযুক্ত স্থান হতে পারে এটি। নাম শখের পল্লী ‘পার্ক’। বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের বশিপুর গ্রামে এটি অবস্থিত। বিনোদন প্রেমীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পার্কটি আবারো নতুন করে সাজানো হয়েছে। সংযোজন করা হচ্ছে নিত্য নতুন ইভেন্ট। ফলে দিনে দিনে বদলে যাচ্ছে শখের পল্লী। ঈদ উপলেক্ষে বন্ধু বান্ধর, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন আপনিও। যেভাবে যাবেন শখের পল্লীতে : দেশের যে কোন স্থান থেকে ট্রেন যোগে আসলে সান্তাহার জংশনে আর বাস যোগে আসলে নওগাঁয় নামতে হবে। উভয় দিক থেকে পার্কটির দূরত্ব হবে প্রায় তিন কিলোমিটার। ১০/১৫ টাকা ভাড়ায় অটোরিকশা যোগে নওগাঁ-সান্তাহার বাইপাস সড়ক সংলগ্ন শখের পল্লী গেটে গিয়ে নামতে হবে আপনাকে। এরপর এক মিনিট পায়ে হেটে বা ওই গাড়িতেই শখের পল্লী পার্কের মূল গেটে পৌঁছে যেতে পারবেন।
শখের পল্লী যেখানে অবস্থিত : বগুড়া জেলার সান্তাহার পৌরসভা এলাকার বশিপুর গ্রামে পার্কটি অবস্থিত। প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে পার্কটি গড়ে উঠেছে। ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রæয়ারী থেকে শখের পল্লী পার্কের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। শুরু থেকেই পার্কটি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়েছে। নতুন রূপে দৃষ্টি কাড়তে ইতিমধ্যে পশ্চিম পার্শ্বের সড়ক বর্ধিত করে টাইগার সেন্টারের সামনে বিশাল আকৃতির বাঘের মুখ, পঙ্খিরাজ, বানরের হ্যান্ডসেক, ফুলের গেইট, সেলফি তোলার জন্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ধরনের ছোট বড় স্ট্যান্ড, পার্কে বসে স্ব-পরিবারে গল্প করার জন্য বসানো হয়েছে অসংখ্য চেয়ার টেবিল। কি কি আছে শখের পল্লীতে : রয়েছে সুইমিং পুল, কমিউনিটি সেন্টার, পিকনিক কর্নার ও ক্যাবল কার। বাচ্চাদের খেলার জন্য দোলনা, সুপার চেয়ার, পিচ্ছিল, মই, স্পিড বোর্ড, প্যাডেল বোর্ড, জলপরীর ভাস্কর্য। আরো রয়েছে ‘মিনি ট্রেনলাইন যা বাচ্চাদের কাছে অতি জনপ্রিয়। সেখানে স্টেশনটির নাম দেয়া আছে ষাটবাড়ী স্টেশন।’ ভাস্করে্যর মধ্যে বিশালাকারের ঈগল, জলপরী, মৎসকন্যা, পেঙ্গুঈন, হাতি, হরিণ, বাঘ, ক্যাঙ্গারু, ঘোড়া, জিরাফ, বকসহ ইত্যাদি। দেয়ালে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া রয়েছে পিকনিক কর্নার বাঁশের কেল্লা, পলাশীর প্রান্তর ও টাইগার সেন্টার। পাশাপাশি ধ্রæবতারা ও শুকতারা নামের কটেজ রয়েছে। যা গেষ্ট হাউজ হিসেবে ব্যাবহার হয়ে থাকে। এই গেষ্ট হাউজে দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। রয়েছে মসজিদ। নামাজের সময় হলে পার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারি ও দর্শনার্থীরাও এখানে নামাজ আদায় করে থাকেন। খাবারের জন্য রয়েছে রেস্টুরেন্ট ও কনফেকশনারী। আরও রয়েছে মিনি চিরিয়াখানা। সেখানে দেখা মিলে বেশ কিছু হরিনসহ বিভিন্ন ধরনের পাখি।
যিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন শখের পল্লী: সড়ক জনপথের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম এই পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেছেন। মানুষের আনন্দ বিনোদনের চিন্তা মাথায় রেখে তিনি এই পার্ক গড়ে তোলেন। তার স্বপ্ন এই শখের পল্লী পার্কটি একদিন আন্তর্জাতিক মানের পার্ক হবে। এ জন্য তিনি বর্ধিত করন কাজ চলমান রেখেছেন। সেই সাথে তিনি আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা যেন এখানে এসে কোনো ভাবেই নিরাশ না হন।