সর্বশেষ সংবাদ ::

নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালে রক্তদহ বিলে অবাধে মাছ শিকার

বগুড়া সংবাদ : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল (রিংজাল) দিয়ে অবাধে মাছ শিকার চললেও প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তরের রহস্যজনক ভুমিকার অভিযোগ উঠেছে। রক্তদহ বিলে অবৈধ জাল দিয়ে দেদারসে মাছ ধরার কারণে দেশীয় মাছের সংকট দেখা দিচ্ছে। মাছের পাশাপাশি কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ, ব্যাঙ প্রভৃতি জলজ প্রজাতির টিকে থাকা ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, এক শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারী (জেলে) বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই জাল দিয়ে মাছ নিধনে। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বিলে অসাধু মাছ শিকারীরা চায়না দুয়ারি জাল ফেলছে। কৌশলগত কারনে সকল প্রকার মাছ এই জালে আটকা পড়ে। জাল থেকে বড় মাছ মাছ সংগ্রহ করার পর সকল রেণু মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী শিকারীরা শুকনা জায়গায় ফেলে রেখে যায়। পরে শুকনা স্থানে থেকে রেণু পোনা ও জলজ প্রাণী মরে যায়। চায়না দুয়ারি জালে চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কই, শিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ সব ধরনের মাছ ধড়া পড়ে। নিষিদ্ধ জাল দিয়ে বিলে অবাধে মাছ শিকার বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়ে না। রক্তদহ বিলের পাড়ের  দমদমা গ্রামের বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম বলেন, রিং জাল এমন একটি জাল সেটিতে শুধু মাছ নয় সব ধরনের জলজ প্রানী আটকা পড়ে। মাছ ও জলজ প্রানী ছাড়াও এই জালে প্রাণীর ডিম ধড়া পড়ে এবং নষ্ট হয়ে যায়। এই জালের কারনে বিলে আর দেশী জাতের কোন মাছ মিলছে না। উপজেলার সান্দিড়া গ্রামের জেলে মিন্টু মিয়া বলেন, রক্তদহ বিলের সকল শাখা খালে ব্যাপক হারে চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে মাছ ধড়া হচ্ছে। এই জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধড়া পড়ে কিন্তু এই জাল ব্যবহারের কারনে মাছের ডিম ও রেণু পোনা ধংস হয়ে যাচ্ছে। ছাতনী গ্রামের বাসিন্দা রতন খান বলেন, চায়না দুয়ারি জালে মা মাছ ও রেণু মাছ নিধন হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে মাছের প্রজননও অনেক কম হয়েছে। হাট বাজারে দেখা মিলছে না দেশীয় প্রজাতির মাছের। সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন বলেন, রক্তদহ বিলে যে হারে  নিষিদ্ধ এই চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার হচ্ছে তাতে এটি বন্ধ না হলে হয়তো বা আর মিলবে না দেশী প্রজাতির মাছ।
গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার জেলে পরিবার রয়েছে। তারা সারা বছর মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। বেশির ভাগ জেলে সুতি জাল ও খলসানি, বৃত্তি দিয়ে মাছ শিকার করে থাকে। কিন্তু কিছু অসাধু জেলে এবং গৃহস্থরা চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করছে। চায়না দুয়ারি জালের কারনে জেলেদের অন্যান্য জালে মাছ পরছে না। ফলে মাছ না পেয়ে অনেক জেলে বেকার হয়ে পরেছে। বগুড়ার আদমদীঘি, নওগাঁর রানীনগর ও আত্রাই উপজেলার হাট-বাজারে এই চায়না দুয়ারি জালের অবাধ কেনা বেচা চলছে। হাট-বাজার ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে তৈরী হচ্ছে এই জাল।
এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন বলেন, আমরা এগুলোর প্রতিরোধে অভিযানও পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে জাল আটক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। নিষিদ্ধ এই চায়না দুয়ারি জালের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

Check Also

জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে পাবনা জেলা দলকে পরাজিত করে বগুড়া জেলা ফুটবল দল তৃতীয় রাউন্ডে উন্নীত

বগুড়া সংবাদ : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) আয়োজিত জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের রবিবার বগুড়া ভেনুর খেলায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *