বগুড়া সংবাদ : বগুড়া শাজাহানপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, নিয়োগ বানিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদত্যাগ দাবীতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা উপজেলার শিক্ষাঙ্গন। প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন বিক্ষোভের পাশাপাশি ঘন্টার পর ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করছে শিক্ষার্থীরা।
মূলত আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকেই একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন শুরু হয়। ইতোমধ্যেই সরকারী চাঁচাইতারা মাদলা যুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জনা রানী এবং শাহনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক পদত্যাগ করেছেন। এছাড়া আন্দোলনরত অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা পালিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
আজ রোববার মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ডেমাজানী শহীদ মোখলেছুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়, বেলপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়, চোপীনগর উচ্চ বিদ্যালয়, শাহনগর উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাদুর পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ একদিনেই হাফ ডজনেরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এক দফা এক দাবী নিয়ে আন্দোলনে মাঠে নামে। একপর্যায়ে বেলপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্তরে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এছাড়া উপজেলার মাঝিড়া ষ্ট্যান্ডে মাঝিড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আড়িয়া বাজার স্ট্যান্ডে ডেমাজানী শ ম র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রায় আড়াই ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় শত শত যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একদল সদস্য মাঝিড়া ও আড়িয়া বাজার এলাকায় গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের শান্ত করেন। পরে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে উপজেলার গোহাইল ইসলামীয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজ, নিশ্চিন্তপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক দফা এক দাবী নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে যে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হাতে গোনা দুই একটা ছাড়া বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরকার দলীয় নেতারা প্রধান শিক্ষকদের সহযোগীতায় জোরজুলুম করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়ে নিয়োগ বানিজ্য, প্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমন কি উপ-বৃত্তির টাকা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়নি। তাই এই স্বাধীন দেশে আর দূর্নীতিবাজদের কোন ঠাঁই নেই।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহসিয়া তাবাস্সুমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এপর্যন্ত বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ জানিয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বভার দেয়া হয়েছে। এছাড়া এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জিয়াউর রহমান
শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
তাং-১৮.০৮.২৪ ইং
০১৭১৭-৪২৩৮১৭