
বগুড়া সংবাদ (মাহমুদুল হাসান মুনজু সারিয়াকান্দি ,বগুড়া) : প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৩ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষে লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। চাষাবাদ করা হয়েছে ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে।লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষাবাদ কম হলেও ফলন বাম্পার হয়েছে।
কৃষকরা এখন টোবা (লাল মরিচ ) উত্তোলন করে শুকাতে শুরু করেছে । উপজেলার কাজলা, চালুয়াবাড়ি,বােহাইল, হাটশেরপুর,সারিয়াকান্দি ইউনিয়নে যমুনার চরাঞ্চলে মরিচের ফলন বেশি হয়েছে।
এবার বাজারে কৃষকের লাল টােবা মরিচ ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে এবং এবং শুকনো মরিচ মান ভেদে ৭০০০ থেকে ৮০০০ হাজার টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।
সারিয়াকান্দি ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের জিয়ারুল মুন্সির ছেলে কৃষক ইসরাফিল রানা জানান, ৭৫ শতক জমিতে তিনি দেশি জাতের মরিচ চাষ করেন।
তিনবার নিড়ানিতে তার কামলা খরচ ৪৫ হাজার টাকা, সার ও কীটনাশক ওষুধে খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা ও পানি সেচ দিতে খরচ হয়েছে ৫ হাজার টাকা। ৭৫ শতক জমিতে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। প্রথম তােলায় মরিচ তুলছেন ৬৫ মণ এবং দ্বিতীয় বার মরিচ উত্তােলন করেছেন ৩৫ মণ। মােট ১০০ মণ টােবা মরিচ উত্তােলন করেছেন তিনি। ১০০ মণ টােবা মরিচ শুকিয়ে তিনি ২৫ মণ শুকনা মরিচ পেয়েছেন। বর্তমানে ৮০০০ টাকা দরে বিক্রি করলে ২৫ মণ শুকনা মরিচের দাম পাবেন দুই লাখ টাকা।
সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কূদরত আলী জানান, হাইব্রিড জাতের কাচা মরিচের ফলন বেশি হয় । দামও ভালো পায়। কিন্তু এবার কৃষকেরা প্রথম দিকে কাচা মরিচের দাম ভালো পেলেও পরে আর পায়নি।ফলে কৃষকরা হাইব্রিড জাতের মরিচও টােবা করে শুকিয়ে বিক্রি করছে। ছাল মােটা হওয়ায় টােবা শুকনা মরিচের চাহিদা কম। কিন্তু ছাল মােটা হওয়ায় এর আবার ওজন বেশি হয় । তবে দেশি জাতের শুকনা মরিচের চাহিদা বেশি। দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষক।
সারিয়াকান্দি উপজেলার হাট ফুলবাড়ী ইউনিয়নের মরিচ ব্যাপারি শাহিন মন্ডল বলেন, মানভেদে মরিচের বাজার ৭হাজার থেক ৮ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত কেনাবেচা হচ্ছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার উৎপাদিত মরিচের চাহিদা বেশি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেটসহ দেশের বড় বড় আড়ৎগুলোতে সরবরাহ করা হয়। দেশে বগুড়ার সারিয়াকান্দি মরিচের খ্যাতি থাকায় পাবনার স্কয়ার কোম্পানি, প্রাণ গ্রুপ, বিডি ফুড সহ বিভিন্ন কোম্পানি তাদের নিয়োজিত এজেন্টদের মাধ্যমে সারিয়াকান্দির মরিচ সংগ্রহ করে থাকে। এ মরিচ প্রক্রিয়াজাত ও মসলা আকারে উৎপাদন করে দেশ ও বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ কালবেলাকে জানান, কৃষকদের পরিশ্রম, অনুকূল আবহাওয়া ও কৃষি অফিস থেকে নিবিড় তদারকি করায় এবার মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।