
বগুড়া সংবাদ (মোশাররফ হোসেন মজনু,সোনাতলা ,বগুড়া) : সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের অন্তর্গত হলিদাবগা খেয়াঘাটে বাঙ্গালী নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি বন্যার পানি ও কচুরিপানার চাপে ভেঙ্গে ভেসে গেছে। এতে নদী পারাপারে বেড়েছে জনদুর্ভোগ। এখানে একটি পাকাব্রিজ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরদাবী তুলেছেন এলাকাবাসী। এ ঘাট দিয়ে যুগ যুগ ধরে নদীর দু’পাড়ের প্রায় ৩০ গ্রামের কৃষক,শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী-সহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ প্রতিনিয়ত ডিঙ্গি নৌকা যোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হয়ে আসছে। নদী পারাপার হওয়া একমাত্র ভরসা ডিঙ্গিনৌকা। কোনো এমপি, মন্ত্রী কিংবা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা এখানে ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা নেননি। অথচ এ খেয়াঘাট অতীব গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ঘাটের পশ্চিম তীরেই রয়েছে বাঙালী হাট। এছাড়া আরো দুটি হাট ও একটি কলেজ-সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ভেলুরপাড়া রেলস্টেশন, জোড়গাছা ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, দুটি ব্যাংক, এনজিও অফিস ও বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঘাটের পূর্ব পাশে রয়েছে পাকুল্লা ইউনিয়ন পরিষদ, পাকুল্লা হাট,হরিখালী হাট,কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। নদীর দুই পাড়ে রয়েছে কৃষকদের বহু আবাদী জমি। যারা ট্রেনযাত্রী,তাদের একবার খেয়া নৌকা মিছ হলে তো ট্রেন মিছ। আর শিক্ষার্থীদের হয় ক্লাস মিছ। অর্থাৎ নদী পারাপার হওয়া সবার জন্য দুর্ভোগ। এ দুর্ভোগ লাঘবে হলিদাবগা গ্রামের জোতদার পরিবারের সন্তান বাউল মুকুল গত প্রায় ১০ মাস আগে নদীর দুইপাড়ের কিছু যুবকদের নিয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ ব্যাপারে একটি বৈঠক করেন। এ মহৎ উদ্যোগ কাজে সারা দিলেন যুব সমাজ। যেই কথা সেই কাজ। তারা শুরু করলেন বাঁশ,দড়ি,লোহা ও অর্থ সংগ্রহের কাজ। এ সব সংগ্রহ করে এলাকার যুব সমাজ খেয়াঘাটে নদীর ওপর দিয়ে নির্মাণ করেন ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যে সুন্দর একটি বাঁশের সাকো। সাঁকো নির্মাণ হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন এলাকাবাসী। সাঁকোটি নির্মাণ করতে সময় লেগেছে দুই মাস। টাকা ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড়লাখ। রাতে সাঁকো পারাপারের সুবিধার্থে পুরো সাঁকোর ওপর ব্যবস্থা করা হয় বিদ্যুতের আলো। দুই পাড়ের জনসাধারণ রাত-দিন যেকোনো সময় সাঁকোর ওপর দিয়ে সহজে যাতায়াত করতে পেরেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য। গত বেশ কিছুদিন আগে বন্যার পানির ¯্রােত আর উজান থেকে ভেসে আসা অসংখ্য কচুরিপানার চাপে সাঁকোটি উল্টে পড়ে ভেসে যায়। ফলে আবারো দেখা দেয় নদী পারাপারে দুর্ভোগ। শুরু হলো আবার সেই আগের মতো ডিঙ্গি নৌকা যোগে নদী পারাপার। বছরের বারো মাস নদীতে পানি থাকে। বন্যার সময় নদী পারাপার হওয়া সবার জন্য ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। হলিদাবগা খেয়াঘাটে একটি পাকাব্রিজ কিংবা বেইলী ব্রিজ নির্মাণের জন্য উপজেলা এলজিইডি অফিস-সহ অন্যান্য অফিসে আবেদন করেছেন। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে ৫ থেকে ৭টি ইউনিয়নের মানুষ বগুড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় সহজে যাতায়াত করতে পারবে। এজন্য এখানে একটি পাকা স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাসহ এলাকাবাসী। হলিদাবগা নামক স্থানে ৩০০ মিটার একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানালেন উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আতিকুর রহমান তালুকদার।