প্রিন্ট এর তারিখঃ ডিসেম্বর ৩, ২০২৪, ৮:৩১ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২৫, ২০২৪, ১:০৬ এ.এম
রাজশাহীতে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করলেন রাসিক প্রশাসক
[caption id="attachment_7810" align="alignnone" width="750"] রাজশাহীতে জাতীয় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করলেন রাসিক প্রশাসক[/caption]
বগুড়া সংবাদ: রাজশাহীতে জাতীয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ঢাকা ব্যতীত রাজশাহীসহ সকল বিভাগে এইচপিভি টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় রুয়েট অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজ মিলনায়তনে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। অগ্রণী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিহি ও প্রজ্ঞাকে টিকা প্রদানের মধ্যে এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, আমি জানি তোমরা মেয়েরা একটু ভয় পাও। তোমরা টিকা নিতে কোনো ভয় পাবেনা। এই টিকা বেলজিয়াম থেকে আমদানি করা হয়েছে। এটি বিশ^ব্যাপী পরীক্ষিত ও নিরাপদ। তোমরা তোমাদের সহপাঠিদেরকে টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করবে, যাতে টিকা নিতে কেউ বাদ না পড়ে। এই টিকা অনেক মূল্যবান। এখন যদি টিকা নেওয়া থেকে কেউ বাদ পড়, তাহলে পরবর্তীতে এই টিকা নিতে হবে তিনটি ডোজের মাধ্যমে।
মেয়েদের তিন ধরণের ক্যান্সার বেশি হয়। জরায়ূমুখ ক্যান্সার, জরায়ূ ক্যান্সার ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার। অন্য ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কার করা না গেলেও জরায়ুমুখ ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কার করা হয়েছে। এই ক্যান্সারে আক্রান্ত দেশে অনেক মেয়ে মারা যায়। সারা পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশে এ রোগে মৃত্যুর হার চতুর্থ। এটির প্রধান কারণ হচ্ছে বাল্যবিবাহ। অল্পবয়সে বিবাহিত নারীদের এ ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোভিডের আগে বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ ছিল শতকরা ৩১ ভাগ। কোভিডের পরে সেটা দাঁড়িয়েছে শতকরা ৪১ ভাগ।
তিনি বলেন, এই রোগের লক্ষণ প্রথমে ধরা যায় না। যখন বুঝতে পারা যায় তখন এই গোপন রোগের কথা কাউকে লজ্জায় বলা যায় না। যারা শেষ ভাগে পরিবারে স্বামীকে এ রোগের কথা বলেছেন, তাদের শতকরা ৮০ ভাগ নারীই তালাকপ্রাপ্ত হয়ে গেছে। মহানগর পর্যায়ে ২৩ হাজার ৫শ ১০ জন শিক্ষার্থীকে এই টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে আর রাজশাহী বিভাগে প্রায় ৯ লক্ষ ৫৫ হাজার জনকে এ টিকা দেয়া হবে।
তিনি বলেন, নগরীর ৩০৬টি স্কুলে ২৫৩টি কেন্দ্রে ২জন টিকাদানকারী, ২জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত রয়েছে। কমিউনিটি পর্যায়ে ৭ নভেম্বর শুরু হবে পরবর্তী ৮ কর্মদিবসে ৬০টি কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ ক্যাম্পেইনে নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি ছাত্রী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটি পর্যায়ে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য এই টিকা দেয়া হচ্ছে। মহানগরীতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে অগ্রণী স্কুলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম। অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের সচিব মোঃ মোবারক হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী, ইউনিসেফের ন্যাশনাল ইপিআই কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ হাসানুজ্জামান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডাঃ কামরুজ্জামান, ইপিআই হেড কোয়ার্টার ইঞ্জিনিয়ার মেসবাহউল হক।
পরে সকাল সাড়ে ১১টায় এ উপলক্ষে রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে বিভাগীয় পর্যায়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।
রাজশাহী স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক ডা.আনোয়ারুল কবীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষাথী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্যাভি, পাথ এর সহযোগিতায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
https://bograsangbad.com || বগুড়া সংবাদ