বগুড়া সংবাদ : আশরাফ মুকুল হত্যার দ্রুত বিচারের দাবীতে সোমবার বগুড়া প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন বড় ভাই মোঃ রবিউল করিম চাঁন মাষ্টার। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১৫ জুন ২০২৪ তারিখে সকাল ৫ ঘটিকায় আমার ছোট ভাই মোঃ আশরাফ মুকুল সরকারের মরদেহ আমার বাড়ির পূর্বে-দক্ষিণ পার্শ্বে একটি দোকানের পিছনে, বাঁশঝাড়ের নিচে, পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোকজন আমাকে খবর দেয় তার পর আমরা লাশে হালকা আঘাতের চিহ্ন পাই এবং তার ব্যক্তিগত মোবাইল ও পায়ের জুতা পাওয়া যায়নি। এসব কারণে এই মৃত্যুটি অত্যন্ত রহস্যজনক বলে মনে হয়। তখন আমি পুলিশকে খবর দেই, খবর পেয়ে পুলিশের শেরপুর সারকেল এবং ওসি শেরপুর থানা-এর উপস্থিতিতে এসআই হোসেন আলী লাশে সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন এবং পোস্টমর্টেম-এর জন্য বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেলে প্রেরণ করে। সুরতহাল প্রতিবেদনে আমাকে স্বাক্ষর করতে বললে আমি সাদা বা খালি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করতে আপত্তি জানালে এস আই হোসেন আলী আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন, "আমি থানায় গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন সঠিক ভাবে প্রস্তুত করব, আপনি নির্ভয়ে ও নিশ্চিন্তে স্বাক্ষর করেন, আমার উপর বিশ্বাস রাখুন" তখন আমরা সরল বিশ্বাসে অলিখিত সাদা সুরতহাল প্রতিবেদন ফরমে স্বাক্ষর করি। আমি একটি হত্যা মামলা করতে চাইলেও শেরপুর খানার ওসি এবং এসআই হোসেন আলী আমাকে বলেন "মামলা করা লাগবে না, আমরা একটি ইউডি মামলা নিয়েছি, ৯০ দিনের মধ্যে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে যাবেন।" তারা আমাকে আশান্ত করেন যে ভিকটিমের মোবাইল এবং জুতা উদ্ধার করা হবে। কিন্তু এর পরেও তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাদের দ্বারা বারাবার আশ্বাসের পরও, ভিকটিমের মোবাইল এবং জুতা উদ্ধার করার কোন তৎপরতা দেখা যায়নি। ২৫ দিন পর অর্থাৎ ১০/০৭/২০২৪ তারিখে আমি আদালতে সন্দেহভাজন আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি এবং আদালত তদন্তভার পিবিআইকে প্রদান করে। পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বলেন ময়নাতদন্ত আসা পর্যন্ত আপেক্ষ করতে হবে। তখন আমি আবার খানায় যোগাযোগ করি, কিন্তু মামলার আই-ও এসআই হোসেন আলী আবারও আশ্বাস দেন যে ১০ দিনের মধ্যেই প্রতিবেদন পেয়ে যাবেন। ৯৫ দিন পরে, আমি জিয়াউর রহমান মেডিকেলে ফরেন্সিক বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে, ভিসারা রাজশাহী সিআইডি ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানোই হয়নি। অবশেষে, ঘটনার ৯৮ দিন পর, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে এটি রাজশাহী পাঠারোর ব্যবস্থা করা হয়। এখন আমি সন্দেহ করছি, থানা ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা সন্দেহভাজন আসামিদের সাথে মিলিত হয়ে এই হত্যাকান্ডে প্রমান নষ্ঠ করার চেষ্টা করছেন। তারা আমাকে সুরতহাল প্রতিবেদন দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর নিয়ে সুরুতহাল প্রতিবেদন তৈরির কথা বলেছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, সন্দেহভাজন আসামিরা গোপনে বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছে, যা পুলিশ বিলম্বের মাধ্যমে সাহায্য করছে বলে মনে হয়। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ফরেনসিক বিভাগের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেন দ্রুত এই মামলার সঠিক তদন্ত সম্পন্ন হয়। মোবাইল ও জুতার মতো গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করতে হবে এবং ভিকটিমের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। আমরা চাই এই রহস্যজনক হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত হয় এবং কেউ যেন প্রমাণ নষ্ট করতে না পারে।