[caption id="attachment_7084" align="alignnone" width="618"] শেরপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও মারপিটের অভিযোগে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপিসহ ১৪১জনের বিরুদ্ধে মামলা[/caption]
বগুড়া সংবাদ: বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামীলীগের সাবেক দুই এমপি, তাঁদের পুত্র ও ব্যক্তিগত সহকারির (পিএস) বিরুদ্ধে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও মারপিটের অভিযোগে মামলা হয়েছে। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরো ১৪১জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসাসি করা হয়েছে আরো অনেককে।
মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি হাবিবর রহমান, তাঁর ছেলে আসিফ ইকবাল সনি, ব্যক্তিগত সহকারি (পিএস) কোরবান আলী মিলন, সাবেক এমপি ও বগুড়া আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, তাঁর ছেলে শেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সারোওয়ার রহমান মিন্টু, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়া, পৌর শাখা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন, পৌর সাবেক প্যানেল মেয়র নাজমুল আলম খোকন, সাবেক কাউন্সিলর শুভ ইমরান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ভুট্টো, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সানি প্রমূখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২৩ সালের ১৫নভেম্বর বেলা সোয়া এগারোটার দিকে শেরপুর শহরের স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের খেজুরতলাস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পশ্চিমপাশে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ওপর স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নির্দলীয় তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন নেতাকর্মীরা। এসময় মামলার এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ লোহার রড, লাঠি নিয়ে বিএনপির ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এমনকি বিএনপির ওই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়ে এবং হাতবোমা নিক্ষেপ করেন। এসময় সোহাগ ও শান্ত নামের দুইজন গুরুতর আহত হন। এছাড়া লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বিএনপি নেতা মামুনুর রশিদ আপেল, যুবদল নেতা আশরাফুদ্দৌলা মামুন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহ কাওছার কলিন্সসহ বেশকয়েকজন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করে দেন। এরপর সশস্ত্র আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এতে এক লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়।
মামলার বাদি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, ঘটনার সময় স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় ছিলেন। তাই থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলেও নিতে অস্বীকৃতি জানায় পুলিশ। পাশাপাশি আওয়ামীলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমরা যেন মামলা করতে না পারি সেজন্য থানায় পাহারা বসিয়েছিল। ওই ঘটনায় মামলা করলে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি-ধামকি দিয়েছিল আ.লীগের নেতাকর্মীরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। কিন্তু ০৫আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বেরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়। ফলে ন্যায় বিচার পেতে এখন মামলাটি দায়ের করেছেন বলে দাবি করেন ওই বিএনপি নেতা।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি হাবিবর রহমান ও মজিবর রহমান মজনুর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম মামলা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।