[caption id="attachment_4985" align="alignnone" width="750"] দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে... সান্তাহার-রাণীনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের নির্মাণ কাজ[/caption]
বগুড়া সংবাদ : নানা প্রতিকুলতা অতিক্রম করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে বগুড়ার সান্তাহার- রাণীনগর আঞ্চলিক মহাসড়কের আট কিলোমিটারের নির্মাণ কাজ। দুর্ভোগ কমাতে কাজের গুনগত মান বজায় রেখে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে শতকরা ৪০ভাগ কাজ। পুরো এই আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর উন্নয়নের মহাসড়কে
যুক্ত হবে উত্তরবঙ্গের ৫টি জেলা। নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়সহ অন্যান্য জেলার চলাচলে দূেেত্বর পাশাপাশি এক ঘন্টা সময় কমিয়ে এনেছে সান্তাহার-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়ক। মোট ৩১কিলোমিটার সড়কের মধ্যে নওগাঁ
সড়ক বিভাগের আওতায় থাকা ২৯.১৯কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষে চলাচলের জন্য তা উন্মুক্ত করা হয়েছে কয়েক বছর আগেই। কিন্তু মহাসড়কের সান্তাহার মোড় থেকে রাণীনগর রেল স্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ছিলো খুবই সরু ও বড় বড় যানবাহন চলাচলের জন্য অনেকটাই অনুপযোগী। সেই ৮ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে প্রশস্তকরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে নওগাঁ সড়ক বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন
৩টি আঞ্চলিক ও ৩টি জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্তায় উন্নিতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সান্তাহার থেকে রাণীনগর রেল স্টেশন পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফিট থেকে ৩৪ ফিট প্রশস্ততায় উন্নিতকরণের জন্য ৬৪কোটি ৭৩লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়।
গত ২০২২সালের ডিসেম্বরের ১৪ তারিখে কাজটির কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পান মেসার্স জামিল ইকবাল লিমিটেড নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। কাজের শুরুতেই বিভিন্ন সমস্যার কারণে নির্মাণ কাজ একটু দেরিতে শুরু হলেও বর্তমানে সড়ক বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারীতে দ্রুত গতিতে নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে জনগুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক দিয়ে পথচারী ও যানবাহনের চলাচলে দুর্ভোগ লাঘবের কথা চিন্তা করে নির্ধারিত সময় আগামী বছরের জানুয়ারী মাসের আগেই কাজ সম্পন্ন হওয়ার আশা করছে নওগাঁ সড়ক বিভাগ। মালশন গ্রামের বাসিন্দা মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন পুরো আঞ্চলিক মহাসড়কের সুবিধা পেতে হলে সান্তাহার-রাণীনগর পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কোন বিকল্প ছিলো না। অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। কাজ শেষ হলেই আমরা অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষ ঢাকার সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য উন্নয়নের
মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবো। এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় ধন্যবাদ জানাচ্ছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সড়ক বিভাগের সকলকে। রাণীনগর রেল স্টেশনের সিএনজি চালক নুর ইসলাম বলেন রাণীনগর থেকে সান্তাহার যাওয়ার আগের সড়কটি ছিলো এবরো-থেবরো। সেই সড়কে গাড়ি চালিয়ে নিজের শরীরের যেমন ক্ষতি হয়েছে তেমনি ভাবে গাড়ির যন্ত্রাংশও নষ্ট হতো। কিন্তু বর্তমানে যে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে তাতে মনে হয় আগামী একশত বছর আর এই আট কিলোমিটার সড়কে মেরামত করা ছাড়া বড় ধরণের কোন কাজে হাত দিতে হবে না। আমরা আর দুর্ভোগের সড়কে যাতায়াত করতে চাই না। আমরা দ্রুত এই সড়ক নির্মাণ কাজের শেষ চাই। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মূখপাত্র মো: হাসান আলী বলেন,আমরা প্রতিটি কাজ নির্ধারিত
ডিজাইন অনুসারে সড়ক বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা মোতাবেক সম্পন্ন করার চেস্টা করছি। যদি আর কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেয় এবংনতুন করে কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয় তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করে সড়ক বিভাগের নিকট হস্তান্তর করতে সক্ষম হবো। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় ব্যক্তিবর্গসহ সকলের কাছ
থেকে সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। নওগাঁ সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক বলেন এই অঞ্চলকে উন্নয়নের মহাসড়কে যুক্ত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগামীর স্মার্ট যোগাযোগ ব্যবস্থা বিনির্মাণে এবং পথচারীদের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে নানা প্রতিকুলতা
অতিক্রম করে নওগাঁ সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি। পূর্বের সরু সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণ, টেলিফোন লাইনের পোল স্থানান্তর, সড়কের দুই পাশে অবৈধ ভাবে দখল করে রাখা জায়গা উদ্ধার করতে গিয়ে কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। এই সব সমস্যা সমাধান করে আমরা নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি। এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে, সড়কের দুই পাশে খাল ও পুকুর থাকায় পানি শুকিয়ে সড়কের দুই পাশে প্রায় আড়াই কিলোমিটার প্যালাসাইডিং কাজ করতে গিয়েও কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। তারপরও বর্তমানে সন্তোষজনক গতিতে আমরা নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি। আমি শতভাগ আশাবাদি আর কোন বড় ধরণের সমস্যা কিংবা বাঁধার সম্মুখিন না হলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা পুরো সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ করতে সক্ষম হবো। এ বিষয়ে নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক রাসেল বলেন, আমরা
সড়কের নির্মাণ কাজ কঠোর নজরদারীর মধ্যে রেখেছি। প্রতিটি কাজ প্রতিনিয়তই সড়ক বিভাগের লোক দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে যথাযথ মান বজায় রেখেই আমরা সড়কের প্রতিটি কাজ বুঝে নিচ্ছি। আমি শতভাগ আশাবাদী সড়ক নির্মাণের কোন কাজে কোন ব্যক্তি কিংবা কোন প্রতিষ্ঠান ছোট- খাটো ত্রুটি ছাড়া বড় ধরনের কোন উল্লেখ্যযোগ্য ত্রুটি খুজে বের করতে পারবেন না। আমরা এই অঞ্চলের মানুষ তথা উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার আমুল
পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে শতভাগ স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছি।