[caption id="attachment_4964" align="alignnone" width="960"] শেরপুরে রিকসা চালক ছুরিকাঘাত, প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল শহর[/caption]
বগুড়া সংবাদ : বগুড়ার শেরপুরে মোটরসাইকেল সরাতে বলায় সন্ত্রাসীর ছুরিকাঘাতে আলাল হোসেন (২২) নামে এক রিকসা চালক গুরুতর আহত হয়েছেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার (১২জুলাই) সকাল নয়টার দিকে শহরের রেজিস্ট্রি অফিস বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহত আলাল হোসেন পৌরশহরের উত্তরসাহাপাড়া মহল্লার আফজাল হোসেনের ছেলে। এদিকে বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে পালানোর সময় বার্মিজ চাকু সন্ত্রাসী আদনান হাবিব ওরফে অনিককে (২৬) আটক করে বিক্ষুব্ধ জনতা। সে শহরের শান্তিনগর এলাকার আব্দুল হাকিমের ছেলে। পরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করা হয়। কিন্তু শতশত মানুষের সামনে রিকসা চালককে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ফলে মুহুর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এমনকি সন্ত্রাসী অনিকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রেজিস্ট্রি অফিস বাজার ও শেরপুর থানার সামনে মিছিল করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এভাবে দুই ঘন্টাব্যাপি চলা ওই কর্মসূচিতে উত্তাল ছিল পৌর শহর এলাকা। একপর্যায়ে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই সন্ত্রাসীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার আশ^াস দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে আসে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদনান হাবিব বাবু ওরফে অনিক শহরের রেজিস্ট্রি অফিস বাজার সড়কের ওপর মোটরসাইকেল রেখে বাজার করছিল। এতে সড়কটিতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসময় রিকসায় যাত্রী নিয়ে আটকে থাকা আলাল হোসেন মোটরসাইকেলটি সরানোর জন্য অনিককে অনুরোধ করেন। কিন্তু ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অনিক। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতÐা শুরু হয়। এরইমধ্যে অনিকের কাছে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে রিকসা চালক আলাল হোসেনের পেটের বাম পাশে আঘাত করলে নাড়ি-ভুড়ি বের হয়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, বাজারের মধ্যে অসংখ্য মানুষের সামনে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাসহ উপস্থিত লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। পরে ইউএনও সুমন জিহাদী, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন ও ওসি রেজাউল করিম রেজার আশ^াসে তারা শান্ত হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে বলে জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, আদনান হাবিব বাবু ওরফে অনিক একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী। সব সময় সশস্ত্র অবস্থায় চলাফেরা করেন। সে মাদকসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে রিকসা চালককে ছুরিকাঘাত করেছে বলে মনে করেন তারা।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে চাকুসহ আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।