বগুড়া সংবাদ : বগুড়া সদরের গোকুল পশ্চিমপাড় বেহুলা বাসরঘর সংলগ্ন গ্রামের মৃত কোরবান আলীর পুত্র আজিজার রহমান। তিনি বাড়ীর পাশে ৬ বিঘা জমিতে কীটনাশক ছাড়া নিরাপদ সবজি চাষ করে ভাগ্য বদল করেছেন। সোমবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলু, ব্রকলি, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেছেন।
কীটনাশক ছাড়া নিরাপদ সবজি চাষ পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে না কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ও কীটনাশক। তাই এসব সবজির দামও যেমন বেশি পাচ্ছেন বাজারে চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। অধিক লাভের আশায় এ মৌসুমে পরিচর্যা ও বেচা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। সারা বছর সবজি চাষের মাধ্যমে এক ফসলি জমিকে পরিণত করেছেন ৩ ফসল। পাচ্ছেন সফলতা। বিঘার পর বিঘা জমিতে নানা ধরনের সবজি চাষ করেছেন। এর ভিতর বেশিরভাগ ফুলকপি, বাঁধাকপি ও ব্রকলি চাষ করা হয়েছে। এই সবজির ওজন তুলনামূলক ভাবে বেশি। দাম ভাল পাচ্ছেন তিনি। এব্যাপারে কথা বললে কৃষক আজিজার রহমান,বগুড়া সংবাদ ডটকম এর প্রতিবেদক এস আই সুমনকে জানান, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক কিনতে হয় না, জৈবসার এবং প্রাকৃতিক গাছ থেকে রস তৈরি করে সেটিই ব্যবহার করা হয়। তিনি আরও জানান, কীটনাশক ছাড়া কিভাবে সবজি চাষ করা যায়, এই পদ্ধতি বেসরকরি প্রতিষ্ঠান টিএমএসএস এর আওতায় এগ্রিকালচার থেকে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৫ বছর ধরে সফলতার সাথে সবজি চাষ করে আসছি। কীটনাশক মুক্ত সবজি উৎপাদন করতে তিনি নিমপাতা, ভেটের পাতা, মেহগনিসহ প্রভৃতি গাছ- গাছরা সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে এসে কুচি কুটি করে কেটে পাতিলে জ্বাল করে রেখে দেন। ২ দিন পর অপ্রয়োজনীয় পাতা ফেলিয়ে পাতিলের পানি সেকিয়ে তৈরী করা হয় কীটনাশকের বিকল্প পদার্থ। সেই তৈরী পদার্থ স্পে মেশিন দ্বারা ফসলে দিলে ক্ষতিকারক পোকামাকড় ধ্বংস হয়ে যায়। এসব নিরাপদ সবজিগুলো স্থানীয় ও দেশের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানির আশা করছেন তিনি। এবিষয়ে সদর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মকলেছার রহমান মুকুলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষাক্ত ক্যামিকেল ছাড়া এধরনের ঘরোয়া পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন খুবই নিরাপদ। আমরা বরাবরই সবজিতে কীটনাশক ব্যবহার না করতে কৃষকদের নানা প্রশিক্ষণ দিয়ে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করার জন্য উদ্বুদ্ধ করি।
টিএমএসএস এর কৃষি সুপার ভাইজার দিলিপ কুমার জানান, নিরাপদ সবজি চাষে আমরা আমাদের সংস্থা থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। নিরাপদ সবজি উপকরণের কীটনাশকের ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করি। নিরাপদ সবজি উৎপাদনকারীরা অধিক লাভবান হচ্ছেন। ফলে কৃষক অর্থিক লাভবানের পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদাও পাচ্ছেন।
কৃষক আজিজার রহমান যে পদ্ধতিতে সবচি চাষ করছেন, এটাই হচ্ছে নিরাপদ সবজির টেকনোলজি। এসব সবজি কখনো মানব দেহের ক্ষতি করবে না।
কীটনাশক ছাড়া সবজি উৎপাদন স্প্রেকারী দূষণ হয় না, ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগও হয় না। তিনি আজিজার রহমানের মত সবাইকে কীটনাশক মুক্ত সবজি উৎপাদন করতে আহ্বান জানিয়েছেন।