[caption id="attachment_376" align="aligncenter" width="753"] প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ বগুড়ায় হিরো আলমের[/caption]
বগুড়া সংবাদঃ প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ বগুড়ায় হিরো আলমের । বগুড়া- ৪ ( কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা ও তাকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাত ৮টার দিকে এরুলিয়ার নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগের কথা জানান হিরো আলম।
হিরো আলম বলেন, আজ আমার প্রচারণার ২য় দিন। সারাদিন ভালই প্রচারণা করেছি। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নন্দীগ্রামের মুরাদপুর বাজার এলাকায় পৌঁছালে ৫/৬ জন যুবক আমাদের মাইক বন্ধ করতে বলে এবং আমার হাতে নৌকার পোস্টার দিয়ে প্রচারণা করাসহ সেখান থেকে চলে যেতে বলে। এক পর্যায়ে তারা আমাদের বলে, এখানে শুধু নৌকার প্রচারণা চলবে এখান থেকে দ্রুত চলে যা। পরে বুঝলাম তারা জাসদের মনোনীত নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম তানসেনের লোক। প্রতিবারই তার সাথে আমার গণ্ডগোল। আমি এবারও নির্বাচনে আসার আগে বলেছিলাম প্রতিবার আমার নৌকার সাথেই গণ্ডগোল হয়েছে এবারও তাই হলো।
হিরো আলম বলেন, আজ ওই পরিস্থিতির পর তারা আমাদের ট্রাক থেকে একটি বাঁশ খুলে ফেলে। এসময় আমার সাথে একটা ছেলে ভিডিও করা অবস্থায় প্রতিবাদ করে। তারা ভিডিও করা দেখে মোবাইল ও সাথে থাকা পাওয়ার ব্যাংক কেড়ে নেয়। পরে তারা মোবাইল থেকে সকল ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করে দেয়। আরেকটা ফোনেও ছিল সেটা তারা ফেরত দেয়নি। আমি এ ঘটনা দ্রুত নন্দীগ্রাম থানায় জানালে তারা ফোর্স পাঠায় এবং ওসি নিজেও ঘটনাস্থলে আসে।
হিরো আলম আরও বলেন, এখুনি নৌকার লোকজন প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। এরা জানে নির্ঘাত আমার কাছে হারবে। আমি জোর গলায় বলেছিলাম আমি গতবার এই নৌকার লোকেরাই আমাকে জোর করে হারিয়ে দিয়েছিল। এবারও হিরো আলমের আগের মত জোয়ার আছে, আমি মাঠে নামছি, লোকজন বলেছে এবারও হিরো আলমকে চাই এমন দেখে তারা এখন থেকেই আমাকে আঘাত করার চিন্তা করছে। এদের চিন্তা হিরো আলমকে যদি আঘাত করে মাঠ থেকে সড়ানো যায় তাহলে তারা মাঠ ফাঁকা পেয়ে যাবে। আমি হিরো আলম একটা কথাই বলতে চাই, যতক্ষণ হিরো আলমের নিঃশ্বাস আছে, ততক্ষণ আপনারা হিরো আলমকে দমাতে পারবেন না, ভোটের মাঠ থেকে সরাতে পারবেন না।
হিরো আলম বলেন, আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না, আপনাদের হুমকিতে ভয় পাই না, আমি কোন কিছুতেই ভয় পাই না। আমি সত্যের পথে আছি, থাকবো। ভোটের দিন পর্যন্ত মাঠে থাকবো। এবার যতক্ষণ পর্যন্ত ফলাফল না ঘোষণা হবে তার আগে মাঠ থেকে আসবো না। প্রয়োজনে লাশ হয়ে ফিরে আসবো তবুও ফলাফল না নিয়ে ফিরবো না।
এক প্রশ্নের জবাবে হিরো আলম বলেন, আমি নন্দীগ্রাম থানার ওসিকে বলেছি এ ঘটনায় জড়িতদের কালকের মধ্যে গ্রেফতার করতে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেন তাহলে ভোটের দিন এদের সাহস আরও বেড়ে যাবে। আমরা এই অন্যায়ের সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি জানাই।
হিরো আলম বলেন, আমি কোন লিখিত অভিযোগ দিইনি। তবে পুলিশ আমার অভিযোগ মোবাইলে রেকর্ড করেছেন। যদি তারা ব্যবস্থা না নেন আমি উপর মহলে বিষয়টি অবগত করবো।
নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আজমগীর হোসাইন বলেন, 'আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। তিনি যে অভিযোগ করেছেন সেরকম কিছু পাইনি। তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
বগুড়া-৪ আসনে হলফনামাসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্রে স্বাক্ষর না করাসহ নানা ত্রুটির কারণে ৩ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই শেষে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। এর তিন দিনের মাথায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন হিরো আলম। কিন্তু ১৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি।হিরো আলম গত ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী (একতারা প্রতীক) হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনে ১৪–দলীয় জোটের শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিমের কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান। এরপর ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। এবার তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।