বগুড়া সংবাদ : বগুড়ায় সাতদিন ব্যাপী বৈশাখী মেলার ২য় দিনে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পাতা খেলা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর এই খেলা উপভোগ করতে শহরের পৌর পার্কে দর্শকদের ছিল ব্যাপক ভিড়। খেলায় ৬ টি তান্ত্রিক দল এবং তুলা রাশির এক ব্যক্তি পাতা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।পাতা খেলা মূলত গ্রামীণ তান্ত্রিকদের খেলা। তান্ত্রিকরা তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে খেলাটি খেলে থাকেন। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাটি আজও ধরে রেখেছেন তান্ত্রিকরা।।খেলা দেখতে আসা আরিফুর রহমান বলেন, বাপ দাদার মুখে এই পাতা খেলার নাম শুনেছি৷ আজ নিজ চোখে দেখলাম। মূলত তান্ত্রিকদের খেলা। যার যত শক্তি সেই পাতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। বনানী থেজে আগত তান্ত্রিক মহরম আলী জানান, ছোট বেলা থেকেই খেলছি৷ এটা তন্ত্র ও মন্ত্র সাধনার খেলা। প্রয়াত আব্দুর রহমান হুজুর আমার গুরু।গাবতলীর পীরগাছা আব্দুল ছালেক ওরফে কাচ্চু কবিরাজ বলেন, ১৬ বছর ধরে এই পাতা খেলছি। বাবার থেকে শিখেছি। আমার দলে এখন দুজন সদস্য৷তান্ত্রিক মোফাজ্জল প্রামানিক বলেন, 'পাতা খেলা মূলত ঝুঁকির খেলা। বান মেরে পাতাকে কাছে টানতে হয়। আর শুধু কাছে টানাই না তাকে আমাদের দাগের মধ্যে এক মিনিট বন্দী রাখবে হবে। এটা খুব একটা সহজ কাজ নয়। কারণ পাতাও আমাদের বান প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। 'খেলায় পাতার ভূমিকায় ছিলেন গাবতলী খুপী এলাকার ৫০ বছর বয়সী মাসুদ প্রামাণিক। তিনি পেশায় একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, আমার তুলা রাশি৷ তাই এই খেলা খেলতে পারি। তুলা রাশি না হলে এই খেলায় অংশ নেয়া যায় না। এখানে তান্ত্রিকেরা বান মেরে তাদের কাছে টানার চেষ্টা করে। আমিও বান প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি৷ এভাবেই খেলা এগিয়ে যায়। মূলত সবাইকে আনন্দ দেয়ার জন্যই এই খেলায় অংশ নিয়ে থাকি। বগুড়া থিয়েটারের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক জাকিউল ইসলাম সবুজ জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এই পাতা খেলা আজ বিলুপ্তির পথে। আমরা বগুড়া থিয়েটার প্রতি বছর চেষ্টা করি এই খেলার আয়োজন করতে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্যই মূলত আয়োজন করা। আজ বিপুল দর্শক এ খেলা উপভোগ করেছে৷