বগুড়া সংবাদ : বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার আলতাফনগর সরকারি শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নাসির আহমেদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগ উঠেছে। কলেজে যোগদানের পর থেকেই তিনি প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষ দখল করে অবৈধভাবে বসবাস করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে, যা শিক্ষার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশে নাসির আহমেদ চলতি বছরের প্রায় দশ মাস আগে কলেজে অধ্যক্ষ (সংযুক্ত) হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পরই তিনি প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন এবং পাশের কক্ষকে রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে। এমনকি ঢাকায় কর্মরত স্ত্রীকে এনে ওই কক্ষে থাকার সুযোগ দেওয়া এবং বিবাহ বার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারী ও স্থানীয় শিক্ষা অনুরাগীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও তিনি সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৯টায় অফিসে বসার নিয়ম থাকলেও তিনি বসেন না। এতে করে কলেজের শিক্ষার মানেও অবনতি দেখা দিয়েছে। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় প্রতিষ্ঠানটির পাসের হার নেমে এসেছে মাত্র ৩০শতাংশে, যেখানে আগের বছরে পাসের হার ছিল প্রায় ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়াও আসবাবপত্র ক্রয়েও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৯ নভেম্বর ২০টি হাইবেঞ্চ কেনার জন্য মেসার্স রুমান-মাসুম ফার্নিচার নামে একটি দোকানের ক্যাশ মেমো ও চালানের ভিত্তিতে ২৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হলেও কলেজে এখন পর্যন্ত একটি বেঞ্চও সরবরাহ করা হয়নি। সরেজমিনে চৌমুহনী বাজারে দোকানটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ নাসির আহমেদ বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন, বেঞ্চ-সংক্রান্ত বিষয়ে অফিস সহকারী জানেন। অফিস সহকারী জিল্লুর রহমান বলেন, ৭০টি বেঞ্চ বানাতে বানাতে দেওয়া হয়েছে তবে দোকান মালিক বেঞ্চগুলো এখন পর্যন্ত সরবরাহ করেনি। এসময় অফিস সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোখলেছার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারী জানান, অধ্যক্ষের অবৈধ বাসস্থান, আর্থিক অনিয়ম, অসৌজন্যমূলক আচরণ এবং দায়িত্বহীনতার কারণে কলেজে অস্থিরতা বিরাজ করছে। শিক্ষকরা দলাদলিতে জড়িয়ে পড়েছেন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। কলেজের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রæত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-কর্মচারী ও স্থানীয় সচেতন মহল।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, মালামাল ক্রয় না করে আগেই ভাউচার দিয়ে টাকা তোলার নিয়ম নেই।
জেলা শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ বলেন, সকাল ৯ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত কলেজ করার নিয়ম। চতুর্থ গ্রেডের কর্মকর্তা জাতির জন্য অনেক কিছু করার আছে। লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।