বগুড়া সংবাদ :সোনাতলায় ধর্ষণ মামলার দুইজন আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। মামলা সূত্রে জানা যায়, সোনাতলা উপজেলার গোসাইবাড়ি গ্রামের লিটন প্রামানিকের ছেলে ফেরদৌস আলম (২৭),লালু মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩০), তবিবর রহমানের ছেলে মহিদুল ইসলাম (৫০) ও তবিবরের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪৫) পরের অনিষ্টকারী, লম্পট, চরিত্রহীন,ধর্ষণকারী ও ছবি ভিডিও ধারণকারী প্রকৃতির মানুষ। পক্ষান্তরে উত্তর গোসাইবাড়ি গ্রামের সাজু মিয়ার স্ত্রী মামলার বাদীনি একজন পর্দাশীল,সহজ-সরল প্রকৃতির ও দুই সন্তানের জননী। সম্প্রতি মহিলাটি নিজ বসতবাড়ির গোসলখানায় গোসল করছিলেন। এ সময় ফেরদৌস আলম আগে থেকে ওঁত পেতে থেকে মোবাইল ফোন দিয়ে গোসল করার অশ্লীল ছবি ভিডিও ধারণ করেন। ওই সময় বাদীনি অবগত ছিলেন না। পরবর্তীতে ফেরদৌস আলম উক্ত মহিলাকে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত গোসলের অশ্লীল ছবি দেখায় এবং কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ভিডিও ধারণ করা ছবি ফেসবুকে প্রচারের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ কথায় মহিলাটি ভীত হয়ে কান্নাকাটি করেন। গত ১ অক্টোবর রাতে মহিলাটির স্বামী কাজের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে এ সুযোগে ফেরদৌস আলম সুযোগ বুঝে মহিলার শয়ন ঘরে ঢুকে লুকিয়ে থাকে। আর মহিলাটি তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। এদিকে উল্লেখিত অন্য আসামীরা ওই শয়ন ঘরের দরজায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে পাহাড়া দেয়। এ সুযোগে লম্পট ফেরদৌস আলম হঠাৎ মহিলার মুখ চেপে ধরে কুপ্রস্তাব দেয়। তখন মহিলা চিৎকার দিলে তার মুখ চেপে ধরে বলে যে চিল্লাচিল্লি করলে ধারণকৃত ভিডিও ছবি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করবো। এ কথা বলেই মহিলাটির মুখ গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর বলে চাইবামাত্র আমার চাহিদা পূরণ করতে হবে। নইলে তোমার সম্মানহানী করবো। তখন মহিলাটি কান্নাকাটি করলে কান্নার শব্দে শিশুদ্বয়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়। তখন লম্পট ফেরদৌস আলম আগামী দিনের জন্য আবার কুপ্রস্তাব দিয়ে মহিলাটিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সহযোগিদের নিয়ে পালিয়ে যায়। যাবার সময় রাতেই বাড়ির আশেপাশে প্রিন্টকৃত অশ্লীল ছবি ফেলে রেখে যায় এবং মোবাইল ফোনে ধারণকৃত অশ্লীল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে। এ ন্যাক্কারজনক বিষয়ে গত ৩১/১০/২০২৫ তারিখ সকাল ১১টার দিকে মহিলাটি সোনাতলা থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহণ না করে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। তাই নিরুপায় হয়ে মহিলাটি বগুড়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত (১)-এ মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলার চার আসামীর মধ্যে ১নং আসামী ফেরদৌস আলম ও ৪নং আসামী আবুল কালাম আজাদকে বাড়ি থেকে পুলিশ গত শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেফতার করে পরদিন শনিবার (৮নভেম্বর) দুপুরে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। থানার এসআই শামীম রেজা উল্লেখিত দুই আসামীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য আসামী পক্ষের লোকেরা বাদী পক্ষকে চাপ সৃষ্টি করছে। এমনটি জানান মামলার বাদীনি ও তার লোকেরা।