বগুড়া সংবাদ :বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় ইজিবাইক চালক মোফাজ্জল হোসেন (৫২) হত্যা ও ইজিবাইক ছিনতাইয়ের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহতের ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসহ মোট পাঁচটি ব্যাটারি চালিত অটো, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু, রশি ও রক্তমাখা পোশাক উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মামলাটি শাজাহানপুর থানায় মামলা নং-০৩, তারিখ ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ দণ্ডবিধি অনুযায়ী রুজু হয়। মামলার বাদী নিহতের স্ত্রী মোছাঃ মাবিয়া সুলতানা (৩৬)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মোঃ ময়নুল ইসলাম, কৈগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি, শাজাহানপুর থানা অভিযানের নেতৃত্ব দেন মোঃ মোস্তফা মঞ্জুর, পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল), বগুড়া। নিহত মোফাজ্জল হোসেন (৫২), পিতা মৃত মোবারক আলী, গ্রাম খলিশাকান্দি, খোট্টপাড়া ইউনিয়ন, শাজাহানপুর, বগুড়া—পেশায় ছিলেন ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালক। দুই বছর আগে তিনি প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় ইজিবাইকটি ক্রয় করে শহরে ভাড়ায় চালাতেন।
গত ৪ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি প্রতিদিনের মতো বাড়ি থেকে বের হন। পরদিন সকাল ৯টার দিকে শাজাহানপুর থানাধীন সুলতানগঞ্জ হাইস্কুলের পেছনে তুতবাগানের প্রাচীরসংলগ্ন স্থানে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
বগুড়ার পুলিশ সুপার মোঃ জেদান আল মুসা, পিপিএম–এর দিকনির্দেশনায় সদর সার্কেল ও জেলা গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে অভিযান চালায়। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে নিহতের লুন্ঠিত একটি বাটন মোবাইল উদ্ধার করা হয় মোঃ সোহেল রানা (২২)-এর কাছ থেকে। তিনি জানান, মোবাইলটি ছোট সজিব নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০০ টাকায় কিনেছেন।
এর সূত্র ধরে পুলিশ ধুনট উপজেলার জয়শিং পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে মোঃ সজিব @ ছোট সজিব (১৯), পিতা মোঃ ফিরোজুর রহমান টিটু মোঃ সজিব @ বড় সজিব (২১), পিতা মোঃ মাসসুল হক মণ্ডল
গ্রেফতারের পর ছোট সজিবের শয়নকক্ষ থেকে একটি সুইজ গিয়ার বার্মিজ চাকু, একটি রশি এবং রক্তমাখা হাফপ্যান্ট উদ্ধার করা হয়। বড় সজিবের স্বীকারোক্তিতে নিহত মোফাজ্জলের ছিনতাইকৃত ইজিবাইকসহ মোট ৫টি ব্যাটারি চালিত অটো ও ১৫টি ব্যাটারি উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে মোফাজ্জল হোসেনকে গলা কেটে হত্যা করে ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেফতারকৃত দুই আসামি ও সাক্ষী সোহেল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করবে।
নিহতের পরিবার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে এবং মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।