বগুড়া সংবাদ : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, অন্তর্বতীকালীন সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসে এখন একটি দলের পকেটে ঢোকার চেস্টা করছে। তারা জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি, গণহত্যার বিচার এবং সংবিধানের মৌলিক সংষ্কার না করেই যেনতেন ভাবে একটি নির্বাচন দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশের মানুষ আওয়ামী স্টাইলের কোন নির্বাচন আর হতে দেবেনা। আমরা ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন চাই। তার আগে অবশ্যই জুলাই সনদের আইনী ভিত্তি দিয়ে সেই সনদের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। শনিবার দুপুরে বগুড়ার টিটু মিলনায়তনে শহর জামায়াতের ষান্মাসিক রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রফিকুল ইসলাম খান বলেন, পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার জুডিশিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। এই হত্যার সাথে জড়িত বিচারক, আইনজীবী, সাক্ষীসহ সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রশাসনের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি সুখী-সমৃদ্ধশালী, দূর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত, মানিবক বাংলাদেশ গড়তে চায়। জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ব আহ্বান জানান।
বগুড়া শহর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রিয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দীন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় সহসভাপতি গোলাম রব্বানী, বগুড়া অঞ্চলের টীম সদস্য অধ্যাপক মাওঃ আব্দুর রহিম ও অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। শহর সেক্রেটারি অধ্যাপক আ.স.ম আব্দুল মালেকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকার, শহর নায়েবে আমির মাওলানা আলমগীর হুসাইন, মাওলানা আব্দুল হাািলম বেগ, সহকারি সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, অধ্যাপক রফিকুল আলম, মোঃ আল-আমিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শহর সভাপতি আজগর আলী, ইসলামী ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখার সভাপতি হাবিবুল্লাহ খন্দকার।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, দেশের মানুষ বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে ড. ইউনূসকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এখান থেকে পিছু হটার সুযোগ নাই। যেকোন মূল্যে হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি ড. ইউনূসের চারপাশে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা সরকারকে বিভ্রান্ত করছে। তারা ড. ইউনূসকে একটি দলের পকেটে ঢুকানোর চক্রান্ত করছে। তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান কোন দল বা ব্যক্তির নেতৃত্বে হয়নি। দেশের ১৮ কোটি মানুষ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির জন্য রক্ত ঢেলে দিয়েছে। সরকারকে জনগণের মুখের ভাষা বুঝতে হবে। জনগণের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হলে পরিনতি ভালো হবেনা।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে জামায়াত-শিবির সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। শত শত নেতাকর্মিকে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মিকে গুম করা হয়েছে। বাড়ীঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও আমাদের চলার গতি থামাতে পারেনি। আমরা এক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করিনা। দুনিয়ার কোন শক্তি আমাদেরকে রুখতে পারবেনা ইনশাআল্লাহ। তিনি বিএনপির প্রতি ইংগিত করে বলেন, একটি দল যুক্তিতে না পেরে যেনতেন একটা নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে চাপ দিচ্ছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইলেও তারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। কালো টাকা, সন্ত্রাস, ব্যালট বাক্স ছিনতাই প্রতিরোধ এবং সবার ভোটের মূল্যায়নের জন্য পিআর পদ্ধতির বিকল্প নাই বলে তিনি দাবী করেন। সম্মেলনে প্রায় দেড় হাজার পুরুষ ও নারী রুকন অংশগ্রহন করেন।