বগুড়া সংবাদ : বুধবার দুপুরে বগুড়ার কাহালু উপজেলা পরিষদ চত্বরে কাহালুর চার ভাই নার্সারি মালিক কর্তৃক উৎপাদিত নিষিদ্ধ ইউক্যালিপটাসের ৪ হাজার গাছের চারা ধ্বংস করা হয়। ইউক্যালিপটাসের ৪ হাজার গাছের চারা ধ্বংসের উদ্বোধন করেন কাহালু উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো. কাওছার হাবীব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাহালু উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা মৎস্য অফিসার নুর নবী, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আবিদুর রহমান, উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসার গোলাম মোর্শেদ, অতিরিক্ত উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মীর কাশিম আলী, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইফতেখার রসূল সিদ্দিক, উপ-সহকারি কৃষি অফিসার তপন কুমার রায়, উপ-সহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ অফিসার মাসুদ রানা সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ইউক্যালিপটাস গাছের চারা ধ্বংসের পূর্বে বগুড়ার কাহালু উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো. কাওছার হাবীব ও উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোসা. জান্নাতুল ফেরদৌস তারা বলেন, কৃষিজমির পাশে ইউক্যালিপটাস লাগানো মারাতœক হুমকি। এ গাছের শিকড় অনেক গভীর গিয়ে প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে। ফলে জমিতে পানি স্বপ্লতার জন্য ফলন ভালো হয় না। সাধারণ গাছ প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি প্রাণিকুলের স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নাইট্রোজেন গ্রহণ করে আর অক্রিজেন সরবরাহ করে সহায়তা করে। কিন্তু ইউক্যালিপটাস তা করে না। বরং এ গাছ অক্রিজেন গ্রহণ, কার্বন ডাই অক্রাইড ত্যাগ এবং নাইট্রোজেন নির্গমন করে। আবাদি জমির আইলে এ গাছ থাকলে থেতে পোকামাকড় ও রোগবালাই বেড়ে যায়। ইউক্যালিপটাস গাছ জমির উরর্বতা শক্তি কমিয়ে দেওয়া সহ কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। কৃষি বিভাগ মাঠ পযায়ে এ গাছ না লাগাতে এবং এর ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে কৃষকদের নিরৎসাহিত করা হচ্ছে। এসব গাছ মানুষ কেন লাগাচ্ছে, তা খুঁজে বের করে ওই লোকগুলোকে নিরৎসাহিত করতে হবে। আমরা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটা উচ্ছেদ করতে পারি, নানা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে পারি। তাহলে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর গাছগুলোর ব্যাপরে কেন যতœশীল অচরণ পাই না? সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হলে এই গাছ রোপনের প্রবণতা কমে যাবে। পরিবেশ উপযোগী না হওয়ায় বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় ২০০৮ সালে এক প্রজ্ঞাপনে দেশে ইউক্যালিপটাসের চারা উৎপাদন নিষিদ্ধ করে। তারপর থেকেই আমরা ইউক্যালিপটাস গাছের চারা উৎপাদন করি না এবং নার্সারির মালিকদের গাছের চারা উৎপাদনে নিষেধ করে আসছি।
তারা আরও বলেন, ইউক্যালিপটাস গাছের ক্ষতিকর দিকগুলো মাটির জলীয় উপাদান শোষণ, অন্যান্য গাছের বৃদ্ধি রোধ, মাটির উর্বরতা হ্রাস, অগ্নিকান্ডের ঝুঁকি, পোকামাকড়ের আবাস্থল ধ্বংস, ভূর্গভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া, জালাশয়ের ক্ষতি, বিষক্ততা ইউক্যালিপটাস গাছের কিছু অংশ যেমন পাতা, তেল মানুষের স্বস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং এর কারণে অ্যালার্জি, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।